থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পদচ্যুত করলেন সাংবিধানিক আদালত

থাইল্যান্ডের সদ্য পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর স্রেথা থাভিসিন। সাংবিধানিক আদালতের রায়ের পর থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে, ১৪ আগস্ট ২০২৪ছবি : এএফপি

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনকে পদচ্যুত করা হয়েছে। দেশটির সাংবিধানিক আদালত আজ বুধবার তাঁকে পদচ্যুত করার পাশাপাশি মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলো। এখন দেশটির পার্লামেন্টকে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই করতে হবে।

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত একজন আইনজীবীকে মন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে স্রেথা ‘নৈতিকতার নিয়ম লঙ্ঘন’ করছেন বলে তাঁর পদচ্যুতির পক্ষে রায় দিয়েছেন পাঁচজন। তবে চারজন বিচারপতি এর বিপক্ষে ছিলেন। স্রেথাকে নিয়ে ফেউ থাই পার্টির তিনজন সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন।

বিচারক পুণ্য উদচাচন রায়ে বলেন, ‘তিনি (স্রেথা) এই মন্ত্রীকে (পিচিট চুয়েনবান) নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সততার পরিচয় দেননি। তাই সংবিধানের আলোকে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে প্রধানমন্ত্রীকে (স্রেথা) পদচ্যুত করা হয়েছে।’

পিচিটকে ২০০৮ সালে দুর্নীতির দায়ে যে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তা স্রেথার অজানা থাকার কথা নয় বলে মন্তব্য করে বিচারক পুণ্য বলেন, কিন্তু তা বিবেচনায় না নিয়ে পিচিটকে মন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে স্রেথা অসততার পরিচয় দিয়েছেন এবং নৈতিক মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছেন।

স্রেথার বিরুদ্ধে নৈতিকতার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার পর পিচিট মন্ত্রিসভা থেকে আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। উল্লেখ্য,  প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে স্রেথাকে সরিয়ে দিতে গত মে মাসে প্রায় ৪০ জন সিনেটর আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাংবাদিকদের স্রেথা বলেন, ‘আমি আদালতের রায়কে সম্মান করি। তবে আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি, প্রায় এক বছরের মতো যে সময়টা আমি ক্ষমতায় ছিলাম, ভালো মনমানসিকতা নিয়ে সৎভাবেই দেশ শাসন করতে চেয়েছিলাম।’

স্রেথাকে পদচ্যুত করার এক সপ্তাহ আগে দেশটির প্রধান বিরোধী দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে (এমএফপি) বিলুপ্ত ঘোষণা করেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজতান্ত্রিক দেশটির এই একই আদালত। তখন প্রগতিশীল দলটির সাবেক প্রধান পিটা লিমজারোয়েনরাতকেও রাজনীতি থেকে এক দশকের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

এক বছরের কম সময়ের মধ্যে স্রেথা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদচ্যুত হওয়ায় দুই দশক ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভোগা দেশটিতে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ২০ বছরে সেনাবাহিনী, রাজতন্ত্রের অনুগত রাজনৈতিক দল ও প্রগতিশীল দলগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে দেশটিতে কয়েকবার সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে, বড় বড় বিক্ষোভ হয়েছে।