চীনের সেই জাহাজ ভারত মহাসাগরে

চীনের গবেষণা জাহাজ শি ইয়ান–৬। চীন সরকারের ওয়েবসাইটের সৌজন্যে

শ্রীলঙ্কার রনিল বিক্রামাসিংহের সরকার চীনের গবেষণা জাহাজ কলম্বো পোর্টে ভেড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে সেই জাহাজ ইতিমধ্যে ভারত মহাসাগরে ঢুকে পড়েছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জাহাজটি বর্তমানে মাঝসাগরে ৯০ ইস্ট রিজ এলাকায় রয়েছে। এটি শ্রীলঙ্কার দিকে আসছে।

২০১৯ সাল থেকে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (আইওআর) চীনের অন্তত ৪৮টি গবেষণা জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।

চীনা শি ইয়ান–৬ গবেষণা জাহাজটি শ্রীলঙ্কার বন্দরে নোঙর করার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি গত সোমবার বলেন, তাঁর দেশের একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) আছে। এ কারণে তাঁদের ভারতসহ অনেক বন্ধুদেশের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। ভারত দীর্ঘ সময় ধরে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। তাই তাঁরা এসওপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

আলী সাবরি আরও বলেছিলেন, ‘আমি যত দূর জানি, অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় আসার (চীনা জাহাজের) অনুমতি আমরা দিইনি। ভারতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ বৈধ, যা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সব সময় বলে এসেছি, আমরা আমাদের অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ রাখতে চাই।’

আলী সাবরি বলেন, আলোচনা চলছে। গবেষণা জাহাজটি শ্রীলঙ্কার এসওপি মেনে নেয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।  

এক মাস আগে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কায় কোনো গোয়েন্দা জাহাজ নেই। জাহাজটি যদি শ্রীলঙ্কার এসওপি মেনে চলে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। শ্রীলঙ্কার ইইজেডে গবেষণা জাহাজ শি ইয়ান–৬ যৌথ সামরিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবে।

ভারত ধরে নিয়েছে, শি ইয়ান–৬ জাহাজ রনিল বিক্রমাসিংহের চীন সফরের পর অথবা চীন সফরের সময়। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১৭ ও ১৮ অক্টোবর রনিল বেইজিংয়ে থাকার কথা।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, উচ্চ সুদহারের ঋণের কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে সংকট দেখা দিয়েছিল। বিআরআই প্রকল্পের আওতায় চীনের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে রাজাপক্ষে সরকার অপ্রয়োজনীয় ও উচ্চবিলাসী প্রকল্প নিয়েছিল। তখন সেই সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন বিক্রমাসিংহে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় রনিলই হাম্বানটোটা বন্দর চীনকে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দিয়েছেন।  

চীনের শি ইয়ান–৬ গবেষণা জাহাজ মালাক্কা প্রণালি হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করে। চীনের গুয়াংঝু থেকে ছেড়ে আসার পর ১৪ সেপ্টেম্বর এই জাহাজকে সিঙ্গাপুর দেখা গিয়েছিল।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হচ্ছে, ভারত নিরাপত্তা ও কৌশলগত উদ্বেগ সম্পর্কে জানানোর পরও চীনের সেই ঋণের চাপে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে। তবে শ্রীলঙ্কা কলম্বোতে এই গবেষণা জাহাজের নোঙরের অনুমতি দিতে বিলম্ব করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।