উত্তর কোরিয়ায় সফররত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘সীমা অতিক্রম না করতে’ সতর্ক করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির ভাষ্য, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে, দেশ দুটি সামরিক সহযোগিতাবিষয়ক কিছু চুক্তি সই করবে।
এ অবস্থায় প্রতিপক্ষ রুশকে সতর্ক করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চ্যাং হো-জিন।
চ্যাং হো-জিন রাশিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কে তাদের (রাশিয়া) জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা মস্কোর বিবেচনায় নিতে হবে।’
চ্যাং যে চুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন, সেটির বিস্তারিত অল্প অল্প প্রকাশ হতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে মস্কো প্রকৃতপক্ষে সেই সীমা অতিক্রম করেছে কি না, তা এখন দেখার বিষয়।
প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে সামরিক সহায়তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ধরনা দিয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া তাতে সম্মত হয়নি। তাই এখন দক্ষিণ কোরিয়া এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করে দেখবে কি না, সেটিও দেখার বিষয়।
দুই দিনের সফরে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত তিনটার দিকে পিয়ংইয়ং বিমানবন্দরে পৌঁছান পুতিন। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজের পাহারায় অন্তত একটি যুদ্ধবিমান ছিল। বিমানবন্দরে পৌছাঁনোর পর করমর্দন ও উষ্ণ আলিঙ্গনে সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।
বিমানবন্দরে পুতিনকে দেওয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। লাল গোলাপ দিয়ে পুতিনকে বরণ করা হয়।
প্রায় ২৪ বছর আগে ২০০০ সালের জুলাইয়ে পুতিন সবশেষ উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন।
এবার পুতিন এমন এক সময়ে উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছেন, যখন উভয় দেশই আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, মোকাবিলা করতে হচ্ছে নানা নিষেধাজ্ঞা।
শত্রুদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বিরক্ত করতে রাশিয়া অনেক সময় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নিজেদের উষ্ণ সম্পর্ককে ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। এদিকে পিয়ংইয়ং মস্কোর কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের আশঙ্কা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পে রাশিয়া সহায়তা দেবে। এ বিষয়ে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিনিময়ে রাশিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলা দেবে উত্তর কোরিয়া, যা ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন—উভয় দেশই অবশ্য অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।