সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে মালদ্বীপ ছাড়লেন গোতাবায়া
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে মালদ্বীপ ত্যাগ করেছেন। খবর রয়টার্সের।
সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে মালদ্বীপের রাজধানী মালে থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন গোতাবায়া। ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই জানানো হয়।
সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানায়, মালের স্থানীয় সময় আজ বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটটিতে ওঠেন গোতাবায়া।
শ্রীলঙ্কা সরকারের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গোতাবায়া আপাতত সিঙ্গাপুরে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে অপর একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানায়, সিঙ্গাপুর থেকে সৌদি আরব যেতে পারেন গোতাবায়া।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-আন্দোলনের মুখে গত মঙ্গলবার রাতে একটি সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান গোতাবায়া। তাঁর সঙ্গী হন স্ত্রী ও দুই নিরাপত্তারক্ষী।
গোতাবায়া মালদ্বীপে গেলে সে দেশে বসবাসরত শ্রীলঙ্কার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁকে মালদ্বীপে আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানান।
মালদ্বীপের সাধারণ লোকজনও দেশটির সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গোতাবায়াকে আশ্রয় দেওয়ায় মালদ্বীপের রাজনৈতিক দলগুলো দেশটির সরকারের কঠোর সমালোচনা করে।
গতকাল বুধবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে গোতাবায়াদের মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ থেকে তাঁরা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ওঠা থেকে বিরত থাকেন। তাঁরা ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে খবর বের হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে মালদ্বীপ ছাড়লেন।
গতকালই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেননি।
শ্রীলঙ্কা সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর গোতাবায়া তাঁর পদত্যাগপত্র স্পিকারের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন।
স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে আজ সকালে গোতাবায়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। গোতাবায়াকে স্পিকার বলে দিয়েছেন যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর (গোতাবায়া) পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া উচিত। তা না হলে তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণে অন্য বিকল্প বিবেচনা করবেন তিনি।
গোতাবায়া তাঁর অবর্তমানে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিয়েছেন। এই পদক্ষেপে দেশটিতে জনরোষ আরও বেড়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন রনিল। তবে কত দিন এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে, তা জানানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে রনিলেরও পদত্যাগ দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
শ্রীলঙ্কা অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সংকটের প্রেক্ষাপটে গত মার্চ মাসে দেশটির হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। তাঁরা লাগাতার সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসছেন।