উত্তর কোরিয়ার শিশু বিদেশি চলচ্চিত্র দেখলে শাস্তি পাবেন মা-বাবাও

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

উত্তর কোরিয়ায় শিশু-কিশোরেরা পশ্চিমা চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান দেখলে তাদের মা-বাবাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া সরকার এ ধরনের একটি বিধান জারি করেছে।

সূত্রের বরাতে রেডিও ফ্রি এশিয়া এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। উত্তর কোরিয়ার তরুণেরা অন্য দেশের মূল্যবোধ ও রীতিনীতির দিকে ক্রমাগত ঝুঁকে পড়ছে—এমন আশঙ্কায় দেশটির সরকার বিভিন্ন কড়াকড়ি আরোপ করছে।

বিভিন্ন নতুন নতুন বিধি আরোপ করা হচ্ছে। নতুন বিধি অনুযায়ী, শিশু-কিশোরেরা বিদেশি চলচ্চিত্র দেখার সময় ধরা পড়লে তাদের মা-বাবাকে ছয় মাসের জন্য শ্রমশিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর তাঁদের সন্তানদের দেওয়া হবে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।

উত্তর কোরিয়ায় অতীতে সন্তানের কাছ থেকে বিদেশি ভিডিও উদ্ধার হলে তাদের মা-বাবাকে কঠোরভাবে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হতো। তবে এখন আর পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি ঝুঁকে পড়া সন্তানের মা-বাবার প্রতি কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখানো হবে না। সন্তানদের যথাযথভাবে সমাজতন্ত্রের আদর্শ শিক্ষা দেওয়ার জন্যও মা-বাবার প্রতি চাপ বাড়ছে।

উত্তর কোরিয়ার যে সূত্রের বরাতে রেডিও ফ্রি এশিয়া খবরটি প্রকাশ করেছে, তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। ওই সূত্র বলছে, ইনমিনবানের সাপ্তাহিক বৈঠকে অভিভাবকদের এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ইনমিনবান হলো স্থানীয় পর্যায়ে তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা।

ওই বৈঠকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মা-বাবাকে তাদের সন্তানদের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য জোর আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়, শিশুদের শিক্ষাটা পরিবার থেকেই শুরু হয়। মা-বাবা যদি সময়ে সময়ে তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা না দেন, তাহলে তারা নাচতে নাচতে পুঁজিবাদের গান গাইবে এবং সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলবে।

কেউ যদি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের মতো করে নাচগান করে, তাহলে তাকেও ছয় মাসের সাজা পেতে হবে। তাদের মা-বাবাকেও সাজা পেতে হবে। এ ছাড়া সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমা ভিডিও চোরাচালানকারীদেরও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

উত্তর কোরিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া নির্মিত নাটক (কে-ড্রামা নামে পরিচিত) দেখা কিংবা এর সিডি বিতরণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। গত বছর দক্ষিণ কোরীয় ও মার্কিন চলচ্চিত্র দেখার কারণে উত্তর কোরিয়ায় মাধ্যমিকে পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। একটি বিমানঘাঁটিতে স্থানীয় মানুষের সামনে ওই দুই কিশোরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।