তুরস্ক ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা অসংখ্য মানুষ বাঁচার জন্য মরিয়া। তারা আর্তচিৎকার করছে। কিন্তু তাদের জীবিত উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা, তুষার ও বৃষ্টি উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারীরা সময়মতো তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। এ কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায়ে প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিলেন দেনিজ। উদ্ধারকারীদের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে কাঁদছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁকে উদ্ধার করা গেছে। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন সেই অভিজ্ঞতা।
দেনিজ বলেন, ‘তারা (আটকে পড়া মানুষ) সবাই সাহায্যের আশায় শব্দ করছে, কিন্তু কেউ সেখানে যাচ্ছে না। আমরা বিধ্বস্ত হয়ে গেছি। সবাই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছে। তারা সবই বাঁচতে চাইছে, কিন্তু তাদের বাঁচাতে পারছি না। সকাল থেকে সেখানে কেউ নেই।’
এদিকে সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের উদ্ধারকারী পরিষেবা সংস্থা হোয়াইট হেলমেটসের সদস্য রায়েদ আল-সালেহ বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য আমাদের সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়াতে হচ্ছে।’
ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৬৫ জন হয়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার জানানো হয়, দেশটিতে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯২১ জন। আহত ১৫ হাজার ৮৩৪ জন। সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৪৪ জনের নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। আহত ৩ হাজার ৪১১ জন।
ভূমিকম্পে মৃত মানুষের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
গতকাল সোমবার তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ছিল ভূমিকম্পটির কেন্দ্র। ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। পরে আরও একটি বড় ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি পরাঘাত হয়। ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ধসে পড়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, যার মধ্যে অনেক বহুতল ভবন রয়েছে।