মিয়ানমারে দুই–তৃতীয়াংশ এলাকায় সংঘাত ছড়িয়েছে, পৌনে ৬ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত

গহিন জঙ্গলে পানিতে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মিয়ানমারের একটি জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীরাফাইল ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গত অক্টোবর থেকে ব্যাপক সংঘাত চলছে। এই সংঘাত দেশটির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় পৌনে ছয় লাখ মানুষ। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) গতকাল শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছে।

ওসিএইচএ জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। রয়েছে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। অভ্যুত্থানবিরোধী জাতীয় ঐক্যের সরকারকে সমর্থন করে পিডিএফ।

হালনাগাদ তথ্যে ওসিএইচএ সংঘাতের জেরে গত ২৬ অক্টোবরের পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে ৫ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে এটা পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা নয়। সংঘাতের মধ্যে সঠিক তথ্য পাওয়া ও টেলিকমিউনিকেশন সংযোগে প্রতিবন্ধকতা থাকায় পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে গত ছয় সপ্তাহের বেশি সময়ে সংঘাতে মিয়ানমারে নারী–শিশুসহ ৩৬৩ জন বেসামরিক মানুষের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন ৪৬১ জন।

ওসিএইচএ বলেছে, মিয়ানমারের বেশির ভাগ এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত চলছে। বিমান হামলা, ভূমিমাইন বিস্ফোরণ, নির্বিচার গ্রেপ্তার, সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে নিত্যপণ্যের সরবরাহ, এমনকি নিরপরাধ মানুষের এক জায়গা থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে এসেছে। সেই সঙ্গে সংঘাতপ্রবণ এলাকায়গুলোয় টেলিকমিউনিকেশন সেবা বাধাগ্রস্ত হওয়া চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

মিয়ানমারে সংঘাতের ফলে খাবার, আশ্রয়, পরিচ্ছন্নতা, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তার মতো মানবিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক মানুষ, এমনটাই জানিয়েছে ওসিএইচএ। সংস্থাটির হিসাবে, সাম্প্রতিক বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো যোগ করলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন

শুধু তা–ই নয়, সংঘাতের কারণে মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ওসিএইচএ। সংস্থাটি বলেছে, ২০২৩ সালে ‘হিউম্যানিটেরিয়ান রেসপন্স প্ল্যান ফর মিয়ানমার’ গ্রহণ করা হয়েছিল। ৮৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের এ তহবিলের আওতায় মিয়ানমারের ৪৫ লাখ মানুষের কাছে বছরজুড়ে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তহবিলের মাত্র ২৯ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন

এর পাশাপাশি গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় জরুরি তৎপরতা তহবিল থেকে মিয়ানমারের জন্য নতুন করে ৭০ লাখ ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ সংঘাতের ফলে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জীবন বাঁচাতে ব্যবহার করা হবে।

তবে এটা পর্যাপ্ত নয়। মিয়ানমারের মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আরও বেশি পরিমাণে সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ওসিএইচএ।

আরও পড়ুন