দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের ঘোষণা, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রেপ্তার
দক্ষিণ কোরিয়ায় নেতৃত্বের সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। আজ রোববার কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে দেশে সামরিক আইন জারি করাকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওলের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন তাঁরা। এরই মধ্যে, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সামরিক আইন জারি এবং জনগণের চাপের মুখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করার পর প্রেসিডেন্ট ইউনের অভিশংসনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। তবে গতকাল শনিবার বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে হওয়া এ–সংক্রান্ত ভোটে উতরে গেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার দেশজুড়ে ওই সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন।
অভিশংসিত হওয়া থেকে রক্ষা পেলেও প্রেসিডেন্ট ইউনের নিজ দলের নেতা বলেছেন, পদত্যাগ করার আগে তাঁকে তাঁর কাজ থেকে সত্যিকার অর্থেই দূরে রাখা হবে।
অভিশংসিত হওয়া থেকে রক্ষা পেলেও প্রেসিডেন্ট ইউনের নিজ দলের নেতা বলেছেন, পদত্যাগ করার আগে তাঁকে তাঁর কাজ থেকে সত্যিকার অর্থেই দূরে রাখা হবে।
প্রেসিডেন্টকে তাঁর দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখার এ প্রস্তাবে তাঁরই নিয়োগ করা প্রধানমন্ত্রী আজ দৃশ্যত মৌন সমর্থন জানিয়েছেন। তবে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, পদত্যাগ বা অভিশংসন ছাড়াই কর্তৃত্বের এমন রদবদল অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার আরেক অপচেষ্টা।
প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করার দাবিতে আজও পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার করা এবং তাঁর দলকে ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
ইউনের সামরিক আইন জারির ঘোষণায় এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে। হুমকিতে পড়ে দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাফল্যের কাহিনিও।
আজ প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনের নিজ দল পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা হ্যান ডং–হুন বলেন, আগাম পদত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পররাষ্ট্রবিষয়ক ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যুক্ত হবেন না।
প্রেসিডেন্টকে তাঁর দায়িত্বপালন থেকে সরিয়ে রাখার প্রস্তাবে তাঁরই নিয়োগ করা প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার মৌন সমর্থন জানিয়েছেন। তবে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, পদত্যাগ বা অভিশংসন ছাড়াই কর্তৃত্বের এমন রদবদল অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার আরেক অপচেষ্টা।
এর প্রতিক্রিয়ায় পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার উ ওন–শিক বলেছেন, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত না করে এভাবে তাঁর কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের কাছে হস্তান্তর করা অসাংবিধানিক। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা দ্রুত স্থগিত করার উপায় বের করতে বিরোধী সব দলের সমন্বয়ে একটি বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দেন তিনি।
ফৌজদারি তদন্ত
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থা বলেছে, প্রেসিডেন্ট ইউনকে একটি ফৌজদারি তদন্তপ্রক্রিয়ার আওতায় এনেছেন কৌঁসুলিরা।
তবে এ খবরের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কৌঁসুলিদের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে ইউন, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং–হিয়ুন ও সেনা কমান্ডার পার্ক অ্যান–সুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের একটি অভিযোগ দাখিল করে ছোট তিনটি বিরোধী দল। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
ওদিকে, কৌঁসুলিদের বিশেষ তদন্ত দল আজ সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ংকে গ্রেপ্তার এবং তাঁর মুঠোফোন জব্দ করেছে বলে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে।