‘তাড়া’ থাকায় উড়োজাহাজের দরজা খুলে দিয়েছিলেন সেই যাত্রী
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণের সময় উড়োজাহাজের দরজা খুলে দেওয়া সেই যাত্রী বলেছেন, উড়োজাহাজে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছিল। এ ছাড়া তাঁর তাড়াও ছিল। তাই তিনি দ্রুত উড়োজাহাজ থেকে নামতে চাইছিলেন।
আজ শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ জানায়, ওই যাত্রী জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এ কথা বলেন।
গতকাল শুক্রবার এশিয়ানা এয়ারলাইনসের এক ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে। উড়োজাহাজটি তখন মাটি থেকে ২০০ মিটার ওপরে ছিল। ১৯৪ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপ থেকে দায়েগু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। বিমানবন্দরটি সিউল থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে।
উড়োজাহাজটি অবতরণের পরপরই দায়েগু পুলিশ ওই যাত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। ওই যাত্রী পরে পুলিশকে জানান, সম্প্রতি চাকরি হারিয়ে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।
দায়েগুর গোয়েন্দা পুলিশের এক সদস্য এএফপিকে বলেন, এই ব্যক্তির কাছে মনে হচ্ছিল, ফ্লাইটটি লম্বা সময় ধরে চলছে। কেবিনে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তিনি তাড়াতাড়ি বের হতে চাইছিলেন।
নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে এই যাত্রীর ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
দরজার কাছের আসনে থাকা এক যাত্রী ঘটনার দৃশ্য ধারণ করেছিলেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, উড়োজাহাজের বাঁ দিকের ফাঁকা জায়গা ও যাত্রীদের সারি দিয়ে বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, যখন ওই ব্যক্তি উড়োজাহাজের দরজা খুলছিলেন, তখন তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন ক্রু সদস্যরা। তবে উড়োজাহাজটি অবতরণ করছিল বলে তাঁরা ওই যাত্রীকে থামাতে পারেননি।
হঠাৎ উড়োজাহাজের দরজা খোলায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ফ্লাইটে থাকা ৪৪ বছর বয়সী এক যাত্রী বলেন, এটা ছিল বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতি। যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা দরজার পাশে বসা ছিলেন, তাঁরা এ ঘটনা দেখে একে একে অচেতন হয়ে যেতে থাকেন। এ সময় উড়োজাহাজের স্পিকারের মাধ্যমে যাত্রীদের কেউ চিকিৎসক কি না, তা জানতে চান ক্রু সদস্যরা।
ওই যাত্রী আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, উড়োজাহাজটি বিস্ফোরিত হয়ে যাবে। আর আমি এভাবেই বুঝি মারা যাব।’
দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কোরিয়ায় এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান পরিবহন খাতের রেকর্ড ভালো।