থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ফিরলেন প্রাউত
থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রাউত চান-ওচা দায়িত্বে ফিরেছেন। প্রাউত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আট বছরের মেয়াদ অতিক্রম করেননি বলে আজ শুক্রবার দেশটির সাংবিধানিক আদালত রায় দেওয়ার পর তিনি ওই পদ ফিরে পান।
সাবেক সেনাপ্রধান প্রাউত ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতায় আসেন। গত মাসে দেশটির বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগ আনা হয়, প্রাউত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আট বছরের মেয়াদকাল অতিক্রম করেছেন। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, কোনো একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আট বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। গত মাসে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাউতকে তাঁর পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সাংবিধানিক আদালতের ওই রায়ের পর বিক্ষোভের আশঙ্কায় নিরাপত্তাবাহিনী সতর্ক অবস্থান নেয়। কারণ, আগে থেকেই বেশ কয়েকটি দল হুমকি দেয়, প্রাউত মামলায় জিতলে তারা রাজপথে নামবে।
আদালতের রুল পড়ে শোনান বিচারক পানিয়া উডচাকন। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক আদালতের সংখ্যাগরিষ্ঠের মত হচ্ছে, প্রাউত তাঁর মেয়াদকাল অতিক্রম করেননি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সময় ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল থেকে গণনা করতে হবে।’
২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রাউত জান্তা সরকারের প্রধান ছিলেন। ৩ বছর পর ২০১৭ সালে কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। তাঁর ক্ষমতায় থাকার মেয়াদকাল নিয়ে প্রাউতের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, প্রাউতের মেয়াদ ২০১৪ সাল থেকেই ধরতে হবে।
আদালতের এখনকার রায় অনুযায়ী, প্রাউতের মেয়াদের শুরু ধরতে হবে সেনাবাহিনীর লিখে দেওয়া সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকে; অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন তিনি। তবে তা নির্ভর করছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ওপর। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জিতলে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।
এদিকে আদালতের দেওয়া রায়কে স্বাগত জানান প্রাউত। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, তাঁর বাকি সময়টায় তিনি অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
তবে আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রাউত দায়িত্ব ফিরে পেলেও আসন্ন নির্বাচনে তিনি বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। দেশটির নারেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নাপিসা ওয়েটুলকাইট বলেন, আদালতের রায় নির্বাচনের আগে ভোটারদের চোখে তাঁকে পরাজিত মুখ হিসেবে হাজির করবে। প্রাউত ও তাঁর দল এখন ভোটারদের কাছে আস্থা হারাচ্ছে। কারণ, দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আশানুরূপ উন্নতি করতে পারছে না।