দেশত্যাগ না করার বিষয়ে আদালতে মুচলেকা দিলেন মাহিন্দা-বাসিল
শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষে দেশত্যাগ না করার বিষয়ে আদালতে মুচলেকা দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।
মাহিন্দা ও বাসিল তাঁদের আইনজীবীদের মাধ্যমে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে মুচলেকা দেন। তাঁরা অঙ্গীকার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আবেদনের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা দেশ ছাড়বেন না।
আগামীকাল শুক্রবার শ্রীলঙ্কার প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সুরিয়ার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনটির ওপর শুনানি গ্রহণ করবেন।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা। তিনি গত মে মাস পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গণবিক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
গোতাবায়ার ছোট ভাই বাসিল। তিনি দেশটির অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-আন্দোলনের মুখে গত মঙ্গলবার রাতে একটি সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। এই যাত্রায় তাঁর সঙ্গী হন স্ত্রী ও দুই নিরাপত্তারক্ষী। আজ তাঁরা সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে মালদ্বীপ ত্যাগ করেন।
বাসিল গোপনে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
গত ৯ মে মাহিন্দা পদত্যাগ করেন। পরে ছেলে নামাল রাজাপক্ষে জানান, তাঁর বাবা দেশ থেকে পালিয়ে যাবেন না।
শ্রীলঙ্কা অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সংকটের প্রেক্ষাপটে গত মার্চ মাসে দেশটির হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। তাঁরা লাগাতার সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসছেন।
গতকালই গোতাবায়ার পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেননি।
গোতাবায়া তাঁর অবর্তমানে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিয়েছেন। এই পদক্ষেপে দেশটিতে জনরোষ আরও বেড়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন রনিল। তবে কত দিন এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে, তা জানানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে রনিলেরও পদত্যাগ দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।