শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব জমা
শ্রীলঙ্কার নতুন পার্লামেন্ট অধিবেশন আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে। এ অধিবেশন সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিরোধী দল সমাগি জন বালাবেগায়া (এসজেবি)। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
এসজেবির জেনারেল সেক্রেটারি রঞ্জিত মাদ্দুমা বন্দরা বলেন, দলের নেতারা গতকাল স্পিকারের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করেছেন। স্পিকারের কাছে দুটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন তাঁরা। প্রথম প্রস্তাবটি সংবিধানের ৪২ অনুচ্ছেদের আওতায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এবং অপর প্রস্তাবটি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
তামিল পার্টি টিএনএ এবং ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) পক্ষ থেকেও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, এসজেবির প্রস্তাব পাস হলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিপরিষদসহ পদত্যাগে বাধ্য হবেন। তবে টিএনএ/ইউএনপির প্রস্তাবটি আইনগতভাবে প্রেসিডেন্টের জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে পারবে না।
গতকাল শ্রীলঙ্কা সরকার একটি মন্ত্রিপরিষদ সাবকমিটি নিয়োগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সংবিধানে সংশোধনী আনার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা তদারক করবে এ কমিটি। এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।
ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কম। এ জন্য জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাজারে পণ্য নেই। জরুরি পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধের জন্য আগামী আট মাসে শ্রীলঙ্কার ৪০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। সরকার ইতিমধ্যে ঋণ পরিশোধ স্থগিত রেখেছে।
এপ্রিলের শুরু থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধীদের দাবি, রাজাপক্ষে জনগণের আস্থা হারিয়েছেন। তবে তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। পরে প্রেসিডেন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিপরিষদ নিয়োগ দেন। তবে নতুন মন্ত্রিসভায়ও বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন তিনি। রাস্তায় যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা চান মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও গোতাবায়া রাজাপক্ষে দুজনই পদত্যাগ করুন।
গত ৩০ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার রঞ্জিত সিয়ামবালাপিতিয়া পদত্যাগ করেন। আজ বুধবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে নতুন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করার কথা রয়েছে।