আফগানিস্তানের একটি শিয়া মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫ জন। স্থানীয় গণস্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে হাসপাতালের সূত্রগুলো আল-জাজিরাকে জানিয়েছে।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার জুমার নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে। দেশটির কান্দাহার শহরের বিবি ফাতিমা শিয়া মসজিদে এ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে মসজিদের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এ সময় অনেককে মসজিদের মেঝেতে শুয়ে কাতরাতে দেখা যায়। অনেকেই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।
বিবি ফাতিমা মসজিদটি ওই শহরের সবচেয়ে বড় শিয়া মসজিদ। আজ বিস্ফোরণের সময় সেখানে প্রায় ৫০০ জন নামাজ আদায় করছিলেন বলে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়।
ঘটনার পরপর হতাহতদের উদ্ধারে সেখানে অন্তত ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছায়। তালেবানে বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। তাঁদের পক্ষ থেকে আহত ব্যক্তিদের রক্ত দিয়ে সাহায্য করার আহ্বান জানানো হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইদ খোসতি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘শিয়া মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার খবরে আমরা ব্যথিত হয়েছি। বিস্ফোরণে অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ঘটনার ভয়াবহতা নিরূপণে এবং হামলাকারীদের ধরতে তালেবানের বিশেষ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
বিবিসির তথ্যমতে, ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মঘাতী বোমা হামলা। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় মিরওয়াইস হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের একজন চিকিৎসক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, মোট তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি মসজিদের মূল দরজার সামনে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদের মূল ফটক। মসজিদের জানালার বেশির ভাগ কাচ ভেঙে গেছে। আরেকটি বিস্ফোরণ হয় মসজিদের দক্ষিণ পাশে। শেষ বিস্ফোরণটি ঘটে মসজিদের অজুখানায়।
মুর্তজা নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে জানান, অন্তত চারটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছে। প্রথম দুটি বিস্ফোরণ মূল নিরাপত্তা ফটকের সামনে ঘটিয়ে তারা আতঙ্ক তৈরি করে। এরপর বাকি দুজন ভেতরে প্রবেশ করে বিস্ফোরণ ঘটায়। তিনি আরও বলেন, সাধারণত জুমার দিনে অন্তত ৫০০ জন মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন।
এর আগে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কুন্দজ শহরের একটি শিয়া মসজিদে বোমা হামলায় শতাধিক হতাহত হন। পরে আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করে। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের চলে যাওয়ার পর সেটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।