বড় ভাইকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিপরিষদ নিয়োগ দিয়েছেন। রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে জোরালো বিক্ষোভ চলার মধ্যেই নতুন মন্ত্রিসভা নিয়োগ দেওয়া হলো। খবর বিবিসির।
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট তাঁর মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন। এরপর নতুন সরকার গঠনে সহযোগিতা করার জন্য বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তবে বিরোধী দল তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এমন অবস্থায় বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষকে আবারও প্রধানমন্ত্রী রেখে বিভিন্ন পদে দলের কয়েকজন সদস্যকে পুনর্নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।
এপ্রিলের শুরু থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধীদের দাবি, রাজাপক্ষে জনগণের আস্থা হারিয়েছেন। তবে তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এবার নতুন মন্ত্রিপরিষদ নিয়োগ দিয়ে রাজাপক্ষে ইঙ্গিত দিলেন যে বিক্ষোভকারীদের দাবির কাছে নতি স্বীকার করবেন না তিনি।
এর আগে বিক্ষোভ ঠেকাতে রাজাপক্ষে কঠোর এক জরুরি আইন কার্যকর করেন। কারফিউও জারি করেন তিনি। নিষিদ্ধ করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তবে তা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকার একপর্যায়ে এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর ভাই মাহিন্দ রাজাপক্ষে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তবে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি ক্রমাগত জোরালো হতে থাকে।
২০১৯ সালে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং শক্ত হাতে দেশ শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসীন হন বিক্ষোভকারীরা। সমালোচকদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদে নিয়োজিত হয়ে প্রেসিডেন্টের ভাই ও ভাতিজারা দুর্নীতি করেছেন। আর একেই দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রধান কারণ বলে মনে করেন তাঁরা।
তবে নতুন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কোনো পদে গোতাবায়া রাজাপক্ষের পরিবারের কেউ নেই।
দুই কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত না থাকায় নিত্যপণ্য আমদানি করতে পারছে না সরকার। মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ক্ষুব্ধ এসব মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেননি। সম্প্রতি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে খেলাপি হওয়া ছাড়া আপাতত আর কোনো পথ নেই। করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ঋণ পরিশোধ অসম্ভব হয়ে উঠেছে।