নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কেউ হয়তো কর্মসংস্থান সৃষ্টির ঘোষণা দেন। কেউবা রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল গড়ে দেওয়ার। তাই বলে নির্বাচনে জিতলে টাকওয়ালা ব্যক্তি কিংবা যাঁদের প্রচুর চুল পড়ছে, এমন মানুষের মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে, এমন প্রতিশ্রুতি সচরাচর শোনা যায় না। এমন ব্যতিক্রমী প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্প্রতি আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।
ওই প্রার্থীর নাম লি জায়ে-মং। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি অব কোরিয়া (ডিপিকে) থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন। আগামী মার্চে দেশটিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে লি জায়ে-মং ঘোষণা দেন, নির্বাচনে জিতলে তিনি দেশের জনগণের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যবিমা চালু করবেন।
ক্ষমতাসীন দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এই ঘোষণার পরপরই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেননা, ওই স্বাস্থ্যবিমার আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ার টাকমাথার মানুষদের মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসার খরচ সরকারি তহবিল থেকে বহন করার কথা যুক্ত রয়েছে। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এমন প্রতিশ্রুতি দেশটির ভোটারদের মধ্যে হাস্যরসের জন্ম দেয়।
টাকওয়ালা ব্যক্তিদের চুল গজানোর চিকিৎসার খরচ জোগানোর ঘোষণা দিতে গিয়ে লি জায়ে-মং বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় এক কোটি মানুষ চুল ঝরে পড়ার সমস্যায় ভুগছেন। চুল গজানোর চিকিৎসায় খরচ অনেক বেশি। অনেক সময় বিদেশ থেকে ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে আনতে হয়। তাই অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও উচ্চ ব্যয়ের এই চিকিৎসা করাতে পারেন না।
লি জায়ে-মংয়ের এই ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে। দেশটিতে টাকমাথার ব্যক্তিদের চুল গজানো নিয়ে কাজ করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠান একটি ভিডিও অনলাইনে ছেড়েছে। ১৫ সেকেন্ডের ছোট্ট ওই ভিডিওতে লি জায়ে-মংকে এবারের নির্বাচনে ‘নিজের চুলের জন্য’ সেরা প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জিয়ং-দা-ইউন নামের একজন বলেন, ‘মাথায় চুল গজানোর জন্য ছয় মাসের চিকিৎসা, ভালো মানের শ্যাম্পু ও চুলের জন্য ভালো, এমন খাবার কিনতে তিন হাজার ডলারের বেশি খরচ হয়। সরকার এই খরচ বহন করলে ভালোই হবে।’ তবে অনেকে এই প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেন। তাঁদের মতে, এটা ভোটারদের নিজের পক্ষে টানার সহজ ও সস্তা কৌশল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি হিসাবে, ২০২০ সালে দেশটিতে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ হাসপাতালে গিয়ে মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসা নিয়েছেন।