চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাঁদের নেতৃত্বে ‘এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্বপ্ন’ দেখতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বকে। বেইজিংয়ে গতকাল রোববার এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোট অ্যাপেকের সিইও সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জিনপিং এই আহ্বান জানান। খবর এএফপির।
বেইজিংয়ে আজ সোমবার থেকে শুরু হবে দুই দিনব্যাপী অ্যাপেক শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন। এর আগে গতকাল সিইও সম্মেলন হয়। এতে জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা যোগ দেন।
শি জিনপিং বলেন, ‘এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জনগণকে স্বপ্ন দেখানোর দায়িত্ব আমাদের। স্বপ্ন সৃষ্টি করার দায়িত্ব আমাদের।’ তিনি বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক স্বার্থে শান্তি ও উন্নয়নে সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে এই স্বপ্ন দেখাবে বেইজিং। চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিং ‘নিজের বিষয়গুলো ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির’ ওপর গুরুত্ব দেবে। শি জিনপিংয়ের মতে, চীনের সার্বিক জাতীয় প্রবৃদ্ধি এখনো শক্তিশালী, যা নতুন উদ্যোগ নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেইজিংকে সক্ষম করে তুলেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, চীন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জিনপিং অ্যাপেকের দেশগুলোকে নিয়ে যে স্বপ্নের কথা বলছেন, তা তাঁর ‘চীনা স্বপ্নের’ মতোই। তবে চীনা স্বপ্ন কী, তাই এখনো স্পষ্ট করে জনগণের সামনে উপস্থাপন করেননি তিনি।
অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বাস। এ ছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় অর্ধেক এবং বৈশ্বিক জিডিপির অর্ধেকের বেশি হয় এই দেশগুলোতেই।
সমবেত শীর্ষ নেতারা: এদিকে অ্যাপেক সম্মেলনে যোগ দিতে বেইজিংয়ে জড়ো হচ্ছেন সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গতকাল চীনের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন। চীন থেকে মিয়ানমার ও অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার কথাও রয়েছে তাঁর।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও গতকাল বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। রওনা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকের আবে বলেন, ‘আমি জাপান-চীন সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠক হলে সমুদ্রসীমায় দুই দেশের মধ্যে দুর্ঘটনাবশত কোনো সংঘর্ষ এড়াতে যোগাযোগ শুরুর প্রয়োজনীয়তার কথা বলব।’
অ্যাপেক সম্মেলনের পাশাপাশি চীন ও জাপানের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। পূর্ব চীন সাগরে একটি ক্ষুদ্র দ্বীপের মালিকানা নিয়ে চীন-জাপানের বিরোধ চলছে। সম্প্রতি সেই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।