বিশ্বে মুরগির আকৃতির সবচেয়ে বড় ভবন, কী আছে এতে
ফিলিপাইনে ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকেরা তাঁদের ঘুরে দেখার তালিকায় এখন অনন্য একটি ভবনকে রাখতেই পারেন। ফিলিপাইনের দুর্গম পাহাড়ে মুরগির আকৃতিতে ভবনটি গড়ে তোলা হয়েছে। বিশ্বে মুরগির আকৃতিতে তৈরি হওয়া সবচেয়ে বড় ভবন এটি। শুধু ঘুরে দেখা নয়, ভবনটিতে আছে থাকার সুব্যবস্থাও। তবে এর জন্য দিতে হবে ভাড়া।
ছয়তলা এই আবাসিক হোটেল ভবনের উচ্চতা প্রায় ৩৫ মিটার বা ১১৪ ফুট। এর ভেতর ১৫টি কক্ষ আছে। সব কক্ষই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। বাইরে থেকে মুরগির অবয়ব যেন নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতে কক্ষগুলোয় কোনো জানালা রাখা হয়নি।
নিগ্রোস অক্সিডেন্টাল প্রদেশের পাহাড়ের ওপর অবস্থিত কাম্পুয়েসতোহান হাইল্যান্ড রিসোর্টে ভবনটি তৈরি করা হয়েছে। যুগান্তকারী ভবনটি গত ৪ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও নাম লিখিয়েছে। এটি বিশ্বে মুরগির আকৃতিতে তৈরি সবচেয়ে বড় ভবন।
এ ভবন তৈরির উদ্যোক্তা রিকার্দো কানো গোয়াপো তান। এ ধরনের নকশায় ভবন তৈরির কথা প্রথম তাঁর মাথাতেই আসে।
৭০ বছর বয়সী তান সিএনএনকে বলেন, তিনি সব সময় চেয়েছেন, এ নশ্বর পৃথিবীতে বড় ধরনের কোনো নিদর্শন রেখে যেতে।
ফিলিপাইনের সাবেক স্থানীয় রাজনীতিবিদ তান নিজেকে মনের দিক থেকে অনেক কচি বলে মনে করেন।
তান বলেছেন, ফিলিপাইনে খেলার জন্য পাখি লালন–পালনের কাজে নিযুক্ত খামারশিল্পকে উৎসর্গ করে তিনি ভবনটি তৈরি করেছেন। এই শিল্পে ফিলিপাইনের হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভবনটিকে মুরগির আকার দেওয়ার বিষয়ে তান বলেন, নিগ্রোসের মানুষের কাছে মুরগির যে গুরুত্ব, তার প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ফিলিপাইনে মোরগ লড়াইকে স্থানীয়ভাবে সাবং নামে ডাকা হয়ে থাকে। এটি সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খেলা।
ফিলিপাইনে স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে মোরগ লড়াই প্রচলিত। থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশেও মোরগ লড়াই জনপ্রিয়। তবে ভারতে মোরগ লড়াই নিষিদ্ধ।
তান বলেন, ‘মোরগ লড়াইয়ের শিল্পে আমাদের প্রদেশে কোটি কোটি পেসো (ফিলিপাইনের মুদ্রা) লেনদেন হয়। ফিলিপাইনে এখন এমন একটি আইকনিক ভবন আছে, যেটি ঐতিহ্য, গর্ব ও সম্মানের উৎস।’
নিগ্রোস অক্সিডেন্টাল প্রদেশজুড়ে দুই হাজারের বেশি খামার আছে, যেখানে মোরগ লড়াইয়ের জন্য মোরগ প্রজনন করা হয়; যা প্রদেশটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি আখ উৎপাদন ও শূকর প্রজনন খামারের জন্যও প্রদেশটির খ্যাতি আছে।
মোরগ হোটেলে চারজনের ধারণক্ষমতার একটি কক্ষের ভাড়া ৮০ ডলারেরও কম। আর সাতজনের ধারণক্ষমতার কক্ষের জন্য ভাড়া দিতে হয় প্রায় ১২০ ডলার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হোটেলটির পেজে দেওয়া মূল্যতালিকা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তানের স্ত্রী আনিতা কয়েক দশক আগে পাহাড়ের ওপর জায়গাটি কিনেছিলেন। ২০১০ সালে ৫ হেক্টর জায়গায় রিসোর্ট গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রিসোর্টটিতে অতিথিদের বিনোদনের জন্য বড় দুটি ওয়েভ পুল, একটি রেস্তোরাঁ, একটি ক্যাফে এবং শত শত ডাইনোসর ও কার্টুনের ভাস্কর্য আছে।