সুদানে ক্ষমতায় ফিরছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী

আবদাল্লাহ হামদক
ফাইল ছবি: এএফপি

আফ্রিকার দেশ সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও দেশটির ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক সমঝোতায় পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে সেনাশাসনের অধীনে থাকা দেশটিতে আটক মন্ত্রী-রাজনীতিকদের মুক্তি ও বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হবে। তবে সুদানের প্রধান বিরোধী দলগুলোর জোট এমন সমঝোতা মানতে নারাজ। তারা দেশটিতে সেনাশাসনের পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাহার চান।

সুদানের ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে মধ্যস্থতা করেছেন ফাদলাল্লাহ বুরমা। তিনি দেশটির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল উম্মা পার্টির প্রধান। স্থানীয় সময় আজ রোববার তিনি দুই পক্ষের সমঝোতার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

বুরমা বলেন, জেনারেল বুরহান ও আবদাল্লাহ হামদক একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে হামদক ক্ষমতায় ফিরবেন। রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।

দুই পক্ষের সমঝোতার জন্য সুদানের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, রাজনীতিকদের নিয়ে নাগরিক সমাজের একটি প্রতিনিধিদল কাজ করছিল। তবে এই সমঝোতার ফলে আগামী দিনগুলোয় দেশটিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হবে, তা জানা যায়নি।
সমঝোতার খবর প্রকাশের পরপর আজ গৃহবন্দী আবদাল্লাহ হামদকের চলাফেরার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সুদানের সেনাবাহিনী। রাজধানী খার্তুমে তাঁর বাড়ির সামনে থেকে সেনাসদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তবে সুদানের বিরোধী দলগুলোর জোট ফোর্সেস অব ফ্রিডম অ্যান্ড চার্জ গতকাল বলেছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সুদানের সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক সমঝোতা নয়, সেনাশাসন তুলে নেওয়ার পক্ষে রাজপথে রক্ত দিয়েছে।

টানা তিন দশক ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সুদানের সেনাবাহিনী। এর পর থেকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশটিতে শাসন করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার। গত ২৫ অক্টোবর সুদানের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করে রাষ্ট্রক্ষমতার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়। জেনারেল বুরহান দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন।

এর পর থেকে খার্তুমসহ সুদানের বিভিন্ন শহরে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। রাষ্ট্রক্ষমতা পুরোপুরি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পণ এবং সাম্প্রতিক ওই অভ্যুত্থানের নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশটিতে সংঘাতে অন্তত ৪০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে সুদানের সেনাবাহিনীর ওপর চাপ তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ও জাতিসংঘ।