দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রেসিডেন্ট, বিরোধীদলীয় নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ শোক জানাচ্ছেন। মোমবাতি প্রজ্বলন করা হচ্ছে, মৌন মিছিলও হচ্ছে। এই শোক একটি মাছের জন্য। তার মৃত্যু যেন কেউই মেনে নিতে পারছে না।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ জাম্বিয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি এটি। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় কপারবেল্ট ইউনিভার্সিটি (সিবিইউ)। এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি পুকুরের বাসিন্দা ছিল মাছটি। বয়স হয়েছিল ২২ বছর। এর মধ্যে ওই পুকুরেই মাছটির কেটেছে ২০ বছর। তার নাম ছিল ‘মাফিশি’। স্থানীয় বেম্বা ভাষায় এই শব্দের অর্থ ‘বড় মাছ’।
জাম্বিয়ায় বিবিসির প্রতিবেদক কেনেডি গন্ডউই জানান, সিবিইউয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে মাছটি ছিল ‘সৌভাগ্যের প্রতীক’। অনেকেই পরীক্ষায় ভালো করার আশায় মাছটিকে যত্ন করত, খাবার দিত। কেউবা স্রেফ ভালো লাগা থেকেই মাফিশির খোঁজ নিত।
কপারবেল্ট ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এডউইন নাম্বো জানান, মাছটি তাঁর মতো অনেকের কাছে চাপমুক্তির একটি মাধ্যম ছিল। মাফিশিকে সাঁতরাতে দেখলে, পানির মধ্যে খেলা করতে দেখলে মনে প্রশান্তি চলে আসত।
কপারবেল্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট লরেন্স কাসোন্দে জানান, মাফিশির মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। মাছটির মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন। মৌন মিছিলও করেছেন তাঁরা। মাফিশির মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোক জানিয়ে তাঁদের কাছে বার্তা আসছে। তিনি জানান, তাঁরা মাছটির মরদেহ সংরক্ষণের পরিকল্পনা করছেন।
জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এডগার লুঙ্গু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক শোকবার্তায় মহাত্মা গান্ধীকে উদ্ধৃত করেছেন। তিনি লেখেন, প্রাণীর প্রতি আচরণ থেকেই একটি জাতির মহানুভবতা ও নৈতিক অগ্রগতি মূল্যায়ন করা সম্ভব। মাফিশিকে উদ্দেশ করে তিনি লেখেন, ‘তোমার জন্য আমাদের মন পুড়বে।’
দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা হাকাইন্ডে হচিলেমা বলেছেন, ‘মাফিশির মৃত্যুতে আমরা সিবিইউয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’