বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট আটক
বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট রোচ কাবোরে একটি সেনা ক্যাম্পে বিদ্রোহী সৈন্যদের হাতে আটক হয়েছেন। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর দুই কর্মকর্তা এবং পশ্চিম আফ্রিকার একজন কূটনীতিক এমনটা জানিয়েছেন। আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যানে গুলির অনেকগুলো চিহ্ন দেখা গেছে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশপাশের বাসিন্দারা রাতভর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
রোববার বেশ কয়েকটি সামরিক ক্যাম্প থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ওই সময় একটি সামরিক অভ্যুত্থানের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও সরকার তা অস্বীকার করেছে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এর আগে বুরকিনা ফাসোয় একাধিক সেনানিবাসে গতকাল রোববার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গুজব রটেছে, দেশটির ক্ষমতা দখলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে অভ্যুত্থানের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে বুরকিনা ফাসো সরকার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদক জানান, রাজধানী ওয়াগাদুগুর সাংগুলে লামিজানা সেনানিবাসে রোববার স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটার দিকে ভারী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সেনা সদস্যরা আকাশের দিকে গুলি ছুড়ছিলেন। এই সেনানিবাসে একটি কারাগার রয়েছে। সেখানের অনেক সেনাসদস্য বন্দী আছেন। ২০১৫ সালে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন তাঁরা।
ওয়াগাদুগু বিমানবন্দরের কাছের একটি বিমানঘাঁটিতেও গোলাগুলি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই প্রতিবেদক। অপরদিকে রাজধানী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে কায়া এলাকায় একটি সেনাঘাঁটিতে গুলি চালানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
সেনানিবাসে গোলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বুরকিনা ফাসো সরকার। তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেনা অভ্যুত্থানের খবর মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বাথেলেমি সিমপোর বলেন, প্রেসিডেন্ট রচ মার্ক কাবোরে আটক হয়েছেন বলে যে ‘গুজব রটেছে’ তা ভুয়া। আর গোলাগুলির পেছনের কারণ এখনো পরিষ্কার না।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানকে আটক হননি। দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে হুমকি দেওয়া হয়নি। তাঁদের (সেনাসদস্য) উদ্দেশ্য কী বা কোনো দাবি আছে কি না এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। আমরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’ অনেক সেনানিবাসে এর মধ্যেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার একাধিক দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। মালি ও গিনির ক্ষমতা নিজেদের দখলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। গত বছরে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ইদরিস দেবি নিহত হওয়ার পর এ অঞ্চলের আরেক দেশ চাদ শাসন করছে সেনা সরকার।