ঘূর্ণিঝড় ও এর প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লিবিয়ার দারনা শহর যেন মৃত্যুপুরী। যেদিকে দুচোখ যায় শুধু ধসে পড়া ভবন। ধ্বংসস্তূপের কারণে রাস্তাঘাটও বন্ধ। ফলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে উদ্ধারকর্মীদের। এসব কারণে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল-পরবর্তী বন্যায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির সঠিক চিত্র তুলে ধরা কঠিন। এত সীমাবদ্ধতার মাঝেও লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিসি।
গত রোববার লিবিয়ার উত্তর উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল আঘাত হানে। এতে বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্দরনগরী দারনা।
লিবিয়া সরকার জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে তিন হাজার মানুষ মারা গেছেন। তবে জাতিসংঘ বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে ছয় হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রেড ক্রিসেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে। তবে দারনার মেয়রের আশঙ্কা, প্রাণহানির সংখ্যা ২০ হাজারে গিয়ে ঠেকতে পারে।
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে দারনা শহরে এখনো হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ। তাঁদের খুঁজে বের করতে কাজ করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে ধ্বংসস্তূপের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী বন্যায় অসংখ্য মানুষকে ভূমধ্যসাগরে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তীব্র স্রোতের কারণে সমুদ্রের ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে মরদেহ ভেসে গেছে।
বুলডোজার দিয়ে দারনা শহরের সড়ক পরিষ্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন, এই আশঙ্কায় দেখেশুনে মন্থরগতিতে সড়ক পরিষ্কারের কাজ করতে হচ্ছে।
ধসে পড়া অবকাঠামোর কারণে সড়ক আটকে যাওয়ায় দারনায় উদ্ধারকর্মীদের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তা ছাড়া জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণেও উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের। এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রবেশের জন্য একটি ‘সি করিডোর’ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
এমন পরিস্থিতিতে দারনায় জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এই বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছে তারা।