সুয়েজ খালে রেকর্ড, এক দিন ১০৭ জাহাজ
সুয়েজ খাল খননের পর এই পথ দিয়ে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক জাহাজ চলার রেকর্ড হয়েছে। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার এক দিনে এই খাল দিয়ে ১০৭টি জাহাজ পাড়ি দিয়েছে। এসব জাহাজে ৬৩ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এই জাহাজগুলোর মধ্যে গ্রিস থেকে মালয়েশিয়া যাতায়াতকারী বিশ্বের বৃহত্তম কনটেইনার জাহাজগুলোর একটি ‘এভার গিফটেড’ও ছিল। এতে ২ লাখ ২৩ হাজার টন পণ্য ছিল। এ ছাড়া আরেকটি বড় জাহাজ ছিল কসকো শিপিং ইউনিভার্সের। হংকংয়ের পতাকাবাহী জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে গ্রিসে যাওয়ার পথে খালটি পাড়ি দেয়। এতে ২ লাখ ৩২ হাজার টন পণ্য ছিল।
এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর এক দিনে সর্বোচ্চ ৯৪টি জাহাজ সুয়েজ খাল পাড়ি দেয়। সেই জাহাজগুলো ৫০ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসাবা রাবি জানান, উত্তর দিক থেকে ৫৬টি জাহাজ ৩৪ লাখ টন পণ্য নিয়ে এবং দক্ষিণ দিক থেকে আসা ৫১টি জাহাজ ২৯ লাখ টন পণ্য নিয়ে খালটি অতিক্রম করেছে।
ইজিপ্ট ইনডিপেনডেন্টের অনলাইনের খবরে বলা হয়, সোমবার সুয়েজ খাল অতিক্রম করা জাহাজের মধ্যে রয়েছে ২৫টি কনটেইনার জাহাজ, ২৮টি বাল্ক ক্যারিয়ারস, ৩৩টি ট্যাংকারস, ৬টি কার ক্যারিয়ার। এ ছাড়া সাধারণ মালবাহী জাহাজসহ নানা ধরনের পণ্য পরিবহনবাহী ১৫টি জাহাজ ছিল।
লোহিত সাগরের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে সুয়েজ খাল খনন করা হয়। বিশ্ববাণিজ্যের ১২ শতাংশের বেশি পণ্য পরিবহন হয় এই খাল দিয়ে। এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যের ‘প্রাণভোমরা’ বলা হয় মিসরের এই খাল। ১৮৫৯ সালে শুরু করে এক দশকে খালটি খনন করা হয়। খালটি খননের কাজে নিয়োজিত ছিলেন ১০ লাখ মিসরীয়। ১৮৬৯ সালের ১৭ নভেম্বর খালটিতে প্রথম জাহাজ ভাসে। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এই খালের দৈর্ঘ্য ১৯৩ কিলোমিটার, প্রস্থ ২০৫ মিটার ও গভীরতা ২৪ মিটার।
২০২১ সালের মার্চের শেষে সুয়েজ খালের সরু পথে আড়াআড়ি আটকে পড়েছিল পণ্যবাহী জাহাজ ‘এভার গিভেন’। তখন খালের দুই পাশে তৈরি হয় ৩০০ নৌযানের জট। ছয় দিন অভিযানের পর সরানো সম্ভব হয় জাহাজটি। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরেও খালটিতে ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সিঙ্গাপুরভিত্তিক জাহাজ ‘অ্যাফিনিটি ভি’ আটকে গিয়েছিল। তবে কয়েক ঘণ্টা পর পাঁচটি টাগবোট দিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছাড়াই সরানো গিয়েছিল জাহাজটি।