২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

পশ্চিম আফ্রিকার নেতাদের বৈঠককে সামনে রেখে হুঁশিয়ারি নাইজারের

আবদোরাহমানে চিয়ানি গত শুক্রবার নিজেকে নাইজারের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

নাইজারের সামরিক নেতারা বলেছেন, তাঁরা তাঁদের দেশের ওপর কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ মেনে নেবেন না। আজ রোববার নাইজেরিয়ায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নেতাদের জরুরি বৈঠককে সামনে রেখে এমন কথা বলেছেন তাঁরা। নাইজারে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দেশটির সেনাবাহিনীকে চাপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

সম্প্রতি এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোম। ওই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি গত শুক্রবার নিজেকে নাইজারের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ফ্রান্স নাইজারকে অর্থসহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা সহযোগিতাও বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।

এমন অবস্থায় নাইজারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা বৈঠকে বসছেন। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জোট ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইসিওডব্লিউএএস) এবং ৮ সদস্যবিশিষ্ট জোট ওয়েস্ট আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি ইউনিয়নের নেতারা জোটগুলোতে নাইজারের সদস্যপদ স্থগিত করতে পারেন। আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ছিন্ন করা হতে পারে। এ ছাড়া দেশগুলো নাইজারের সঙ্গে সীমান্তগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বাজোমকে আবারও ক্ষমতায় ফেরাতে সামরিক হস্তক্ষেপের ব্যাপারেও ভাবা হতে পারে।

নাইজারের পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশ চাদ এ দুই আঞ্চলিক সংস্থার কোনোটিরই সদস্যদেশ নয়। এরপরও দেশটিকে ইসিওডব্লিউএএস সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার চাদের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজকের ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে গতকাল রাতে নাইজারের সামরিক নেতাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিবৃতি পড়ে শোনানো হয়।

জান্তা সরকারের মুখপাত্র কর্নেল আমাদু আবদোরাহমানে বলেন, ‘ইসিওডব্লিউএএস বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো নিয়ামিতে অনিবার্য সামরিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে নাইজারের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করা। আফ্রিকার যেসব দেশ ইসিওডব্লিউএএসের সদস্যদেশ নয়, তাদের এবং নির্দিষ্ট কিছু পশ্চিমা দেশেরও সহযোগিতা নেওয়া হবে।

ইসিওডব্লিউএএস কিংবা এ ধরনের সংস্থাগুলোকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আমরা আমাদের মাতৃভূমির সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।’

পরে আরও একটি বিবৃতি দেয় জান্তা। এতে দেশের জনগণকে রোববার সকাল সাতটা থেকে রাস্তায় জড়ো হয়ে ইসিওডব্লিউএএসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নতুন সামরিক নেতাদের প্রতি সমর্থন দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে বাজুমকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দী করা হয়, এর পর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ জানা যায়নি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স এবং অন্যরা বলছেন তাঁরা এখনো বাজুমকেই নাইজারের বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করে।

পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি নাইজার। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশটি ২০০ কোটি ডলার উন্নয়নে সহায়তা পায়। সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগী হিসেবেও দেশটি কাজ করে। দুটি দেশই পশ্চিম আফ্রিকা এবং মধ্য আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নাইজারকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।