সুদানে গৃহযুদ্ধ ঠেকাতেই অভ্যুত্থান: জেনারেল বুরহান
আফ্রিকার দেশ সুদানে সেনা অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল–বুরহান বলেছেন, গৃহযুদ্ধ ঠেকাতেই গত সোমবার দেশটিতে ক্ষমতা নিয়েছে সশস্ত্রবাহিনী। খবর বিবিসির।
সেনা অভ্যুত্থানের ফলে সুদানে ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক নিরাপদে আছেন বলেও জানিয়েছেন জেনারেল বুরহান। তাঁকে নিরাপত্তার স্বার্থে জেনারেলের ব্যক্তিগত বাসভবনে রাখা হয়েছে। শিগগিরই হামদককে বাড়ি পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন বুরহান।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল বুরহান বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে যে বিপদ দেখেছি, তাতে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারত। গৃহযুদ্ধ ঠেকাতেই ক্ষমতা নিয়েছে সশস্ত্রবাহিনী।’
আবদাল্লাহ হামদকের বিষয়ে জেনারেল বুরহান আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু আমাদের ভয় ছিল যে, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তাই তিনি এখন আমার বাড়িতে, আমার সঙ্গে আছেন। সংকট কেটে গেলে তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন।’
এদিকে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী খার্তুমসহ সুদানের বিভিন্ন শহরে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ও রাস্তাঘাট। দেশটিতে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবাও ব্যাহত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবারের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদানে চলমান বিক্ষোভে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে।
তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সুদানের সেনাবাহিনী। এরপর ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশটিতে শাসন করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার। গত সেপ্টেম্বরে ওমর আল-বশিরের অনুসারীদের একটি অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির অন্তর্বর্তী বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সেনারা।
সোমবার অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকসহ দেশটির একাধিক মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খার্তুমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে সুদানের সেনাবাহিনী।
সুদানে সেনা অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীসহ গ্রেপ্তার সবার মুক্তির দাবি জানিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরব লিগ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন। তাদের সবার পক্ষ থেকে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা স্থগিত করেছে।