এ যেন শত শত কুমিরের মেলা। জলডুব খেলতে তারা একত্র হয়েছে। সরু নদীর দুই পাশ ঘাস-জংলায় ভরা। গা–ছমছমে এমন পরিবেশে একজন নৌকায় করে নদীর মাঝখান দিয়ে যাচ্ছেন! চোখ বন্ধ করে দৃশ্যটা একটু ভাবুন তো। কেমন লাগে? নিশ্চয় গা শিউরে উঠছে।
এমনই এক ভিডিওর সাক্ষী এখন নেটিজেনরা। বিশেষ করে টুইটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিষয়টি তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি কবেকার ও কোথাকার—তা এখনো প্রকাশ না পেলেও ভিডিও যাঁরা শেয়ার করছেন, তাঁদের অনেকেই পরিচিত। সিসিটিভি নামের একটি টুইটার হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে গত বুধবার। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেতে থাকে।
১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইঞ্জিনচালিত ছোট্ট একটি স্টিলের নৌকা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আর এর শব্দে শত শত কুমির পানি ছেড়ে তীরের দিকে ছুটছে। কুমিরগুলো বড় আকারের—কালো, মোটা ও লম্বা।
প্রথম পলকেই ওই ভিডিওর দৃশ্য অনেকের কাছেই ভয়ংকর মনে হবে। আর তা হওয়ারও কথা। সরু নদীতে একই সঙ্গে এত কুমিরের বসবাস মনে বিস্ময়ের উদ্রেক ঘটায়।
কারণ, হিংস্র এ প্রাণীর শক্তিমত্তার কথা চিন্তা করলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে যে কারও। কুমিরের চোয়াল অত্যন্ত শক্তিশালী। এর ধারালো দাঁত শিকারকে নিমেষে কাবু করে। পিঠ থেকে লেজ পর্যন্ত কুমিরের খসখসে কাঁটা কাঁটা বহিরাবরণও দেখতে অনেকের কাছে ভীতিকর।
চার পা–বিশিষ্ট কুমির সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী। মাংসাশী এ প্রাণীর দেখা পাওয়া যায় বিশ্বের প্রায় সর্বত্র—আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে। প্রজাতিভেদে মিঠা ও লোনা—সব পানিতেই এগুলোর অস্তিত্ব রয়েছে। এগুলো পানিতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে এবং চোখের পলকে শিকার ধরে।
তবে পারতপক্ষে কুমির মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়েই চলে। তবে পরিস্থিতি বুঝে মানুষের কাছে এগুলো কতটা ভয়ংকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শত্রু ও শিকারকে বশে আনতে কুমিরের লেজের ব্যবহারের জুড়ি নেই।
এবার আসা যাক ওই ভিডিওর প্রসঙ্গে। অনেক টুইটার ব্যবহারকারী জানতে চেয়েছেন, নৌকায় থাকা ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা কি আদৌ বেঁচে ফিরতে পেরেছেন? নাকি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেল? যদি বেঁচে ফিরে থাকেন, তাহলে কোথায় ও কেমন আছেন? আর নদীর অবস্থানটি কোথায়? কারণ, সিসিটিভি তাদের ভিডিও ক্যাপশনে তা উল্লেখ করেনি। তারা শুধু লিখেছে, ‘একটি নৌকা ভয়ংকর নদী পার হচ্ছে।’