তীব্র ‘তাপ মহামারি’ চলছে: গুতেরেস
বিশ্ব ‘তীব্র তাপ মহামারিতে’ ভুগছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃদ্ধি পাওয়া তাপপ্রবাহে লাগাম টানতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার গুতেরেস বলেন, ‘শত শত কোটি মানুষ তীব্র তাপ মহামারির মুখে পড়েছে। দিন দিন বাড়তে থাকা প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। যে তাপমাত্রায় পানি ফুটতে শুরু করে, এটি তার অর্ধেক।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহাকাশ গবেষণা প্রকল্পের অধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউরোপিয়ান কোপারনিকাস নেটওয়ার্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২১, ২২ ও ২৩ জুলাই ছিল বিশ্বজুড়ে ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন। এর মধ্যে ২২ তারিখে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা রেকর্ড ১৭ দশমিক ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আজ আমরা তীব্র তাপপ্রবাহের দিকে নজর দিচ্ছি। তবে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে জলবায়ু সংকটের আরও অনেক ধ্বংসাত্মক প্রভাব রয়েছে। যেমন আরও তীব্র ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, দাবানল, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ অনেক কিছু।’
এই সংকটে লাগাম টানতে জি-২০ দেশগুলোকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের এসব প্রভাব সামাল দিতে আমাদের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সেই রোগটা হলো, আমাদের একমাত্র আবাসস্থল পৃথিবীকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ফেলা। রোগটা হলো জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি আমাদের আসক্তি। রোগটা হলো জলবায়ু নিয়ে আমাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকা।’
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। ২০২৪ সালেও এখনো বেশ কয়েক মাস বাকি আছে। তাই চলতি বছর আগের বছরের রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে। তাপপ্রবাহের কারণে ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়ে মারা গেছে ১৬ হাজার মানুষ।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির অর্থনৈতিক প্রভাবও রয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বের ৭০ শতাংশ শ্রমিক তীব্র তাপমাত্রার মধ্যে কাজ করার ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন, যা ২০০০ সালের চেয়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। আর তীব্র গরমের কারণে ২০২৩ সাল নাগাদ বিশ্বে অর্থনৈতিক ক্ষতি ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।