পানির ওপর পিঁপড়ার সেতু
প্রাণিকুলে সবচেয়ে পরিশ্রমী প্রাণীদের অন্যতম পিঁপড়া। খুদে এই প্রাণী দিনরাত পরিশ্রম করে চলে। তাদের কাজের যেন শেষ নেই। একটি পিঁপড়া নিজের ওজনের কয়েক গুণ বেশি ওজন বহন করতে পারে। স্বভাবগতভাবেই পিঁপড়া দল বেঁধে কাজ করে। তারা নিজেদের শরীর ব্যবহার করে নানা আকারের অবকাঠামো তৈরি করে ফেলতে পারে।
তাই বলে বয়ে চলা ঝিরির পানি পার হতে আস্ত এক সেতু! একটি চিরহরিৎ বনের ভেতর দিয়ে ওই ঝিরি বয়ে গেছে। নেচার ইজ অ্যামেজিং নামে একটি ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পিঁপড়ার তৈরি ওই সেতুর ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ঝিরিপথ বেয়ে নেমে যাচ্ছে পানি। পানিতে স্রোতও আছে। পানির ওপর সমান্তরালে দুটি লম্বা সেতু তৈরি করেছে কয়েক কোটি পিঁপড়া। একটি পিঁপড়া আরেকটি পিঁপড়াকে পরপর আঁকড়ে ধরে কয়েক ফুট লম্বা এই সেতু তৈরি করেছে। পানির স্রোতের সঙ্গে সেই সেতুও এঁকেবেঁকে ভাসছে। সমান্তরাল সেই সেতু দুটোর মধ্যে সংযোগ করতে বিভিন্ন পয়েন্টে তৈরি হয়েছে আলাদা রাস্তা। সেই রাস্তায়ও একটি পিঁপড়া আরেকটি পিঁপড়াকে আঁকড়ে ধরে। সেতুর দুই প্রান্ত ঝিরির দুই পাশের মাটির সঙ্গে সংযোগ দেওয়া।
ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার কাছে এটি পৃথিবীর সপ্তম বা অষ্টম আশ্চর্য। আমি এমন কিছু কল্পনাও করতে পারি না। এটা অবিশ্বাস্য! দেখুন, পিঁপড়া! তারা কীভাবে এটা করেছে। বলুন আমাকে, তারা কোন জাদুবলে এটা করেছে। একের পর এক তারা আছেই, তারা সেখানে, একের পর এক। কল্পনা করতে পারছেন? দেখুন।’
এই সেতু ধরে পিঁপড়ার দল স্রোত পেরিয়ে খাবারের সন্ধানে ঝিরির এপার–ওপার যায় বা খাবার বয়ে আনে।
পিঁপড়ার অবকাঠামো তৈরির শৈলী অবশ্য নতুন নয়। পিঁপড়া মাটির নিচে রীতিমতো নগর তৈরি করে ফেলে। পিঁপড়ার একেকটি কলোনি দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। কী নেই সেখানে। আছে সুড়ঙ্গ পথ, পথের ফাঁকে ফাঁকে ঘর। একেকটি কলোনিতে কোটি কোটি পিঁপড়া বসবাস করে। একটি কলোনিতে সাধারণত একটি রানি পিঁপড়া থাকে।
পিঁপড়ারা নানান দলে ভাগ হয়ে কাজ করে। কেউ কলোনির অবকাঠামো ঠিকঠাক রাখে, কেউ খাবার সংগ্রহ করে, কেউ পাহারা দেয়। এভাবেই পিঁপোরা বাকি প্রাণিকুলকে একতার শক্তি সম্পর্কে শেখায়।