দূর দেশের ‘রাজাদের’ যুদ্ধে টেকা দায় গরিবের

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পাঁচ মাস পেরিয়েছে।রয়টার্স ফাইল ছবি

ছোটবেলায় দেখা একটি ঘটনা। প্রতিবেশী এক ভদ্রলোকের মেজাজ ছিল চড়া। তাঁর স্ত্রী ছিলেন আরও চড়া মেজাজের। কী খাওয়া হবে আর কী বাজার হবে, এই নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো দুই পক্ষের। কোনো দিন স্বামী চান বড় মাছ আনতে। স্ত্রী বলেন, মাংস আনতে। এ নিয়ে প্রায়ই বেঁধে যেত তুমুল ঝগড়া। শেষ পর্যন্ত আর বাজারে যেতেন না কেউই। তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে মুখ শুকনা করে ভর্তা–ভাজি দিয়ে ভাত খেত। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ঘটত এই ঘটনা। পরিবারের ক্ষমতাধর দুই মানুষের দ্বন্দ্বে বিপদে পড়ত ছোট্ট শিশুরা। প্রবাদের সঙ্গে মিল রেখে বলা যায়, রাজায় রাজায় যুদ্ধে কষ্ট পেত ছোট্ট প্রজারা।

ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবির সুমন লিখেছেন ‘দখল করে কি কারও/ খুলেছে বরাত/ বরং ফুলের বীজ/মাটিতে ছড়াও/যুদ্ধ না হয় যেন/ আর একটাও।’ সুমনরা যতই গান লিখুক, যুগ যুগ ধরে দেশে দেশে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ চলেছে। চলছেও। আর এত সব যুদ্ধে বারবার প্রাণ গেছে উলুখাগড়া কিংবা সাধারণ প্রজার।

‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ, প্রাণ যায় উলুখাগড়ার’—বহু প্রচলিত এই প্রবাদবাক্যের কঠিন সত্যের ছাপ এখন বিশ্বজুড়ে। কেবল পরিবার নয়, প্রতিবেশী, কর্মস্থল, সমাজ, রাষ্ট্রসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজাদের যুদ্ধে প্রাণ যায় উলুখাগড়াদের। এমনই উলুখাগড়া এখন আমরা। যুদ্ধ চলছে সুদূর ইউরোপ মহাদেশের রাশিয়া আর ইউক্রেনে। আর প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাধারণ মানুষের।

দোষ কার, এ নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও রুশপন্থী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে ভারী ভারী বিশ্লেষণ। তবে দোষ যারই হোক, শেষ বিচারে প্রাণ যাচ্ছে উলুখাগড়ার। অর্থাৎ সাধারণ বিশ্ববাসীর।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের বিরোধ নতুন নয়। যুদ্ধটা ইউক্রেনের সঙ্গে বাঁধলেও যুদ্ধটা আসলে পুতিনের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের। পুতিন আর পশ্চিমা ‘রাজাদের’ যুদ্ধে বিশ্ববাসীর কপালের ভাঁজ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। খাবারের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। নেই জ্বালানি। ডলারের দাম বাড়ায় পণ্য কিনতে পকেট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বড় অঙ্কের অর্থ। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান দেউলিয়া হচ্ছে আর টেনেটুনে চলছে এশিয়া, ইউরোপের অনেক দেশই।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে) এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
ফাইল ছবি

নানা কাটছাঁট আসছে বাংলাদেশেও।দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোসহ নানা পদক্ষেপ নিয়ে জ্বালানি তেল ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। খরচ কমাতে বিদেশি ফল, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন সামগ্রী আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারের খরচ কমাতেও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।এই পরিস্থিতিতে ঋণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করার অনুরোধ জানিয়ে গত রোববার আইএমএফকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে সরকার।

গ্যাস নিয়ে সংকট

যুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থানে ভ্লাদিমির পুতিন আর পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা অটল। তাঁদের সমর্থনে থাকা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও দমে যাওয়ার পাত্র নন। পাঁচ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধের সংকট এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বিশ্ববাসী। বড় দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে গ্যাস নিয়ে।

আরও পড়ুন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের যে গতি-প্রকৃতি, তাতে রাশিয়া যেকোনো সময় ইউরোপের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইউরোপের দুর্গতির অন্ত থাকবে না। কারণ ইউরোপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৯ শতাংশই জৈব জ্বালানিভিত্তিক, যা আসে মূলত রাশিয়া থেকেই।

নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন। এই পাইপলাইন দিয়েই রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ হয়।
রয়টার্স ফাইল ছবি

বিবিসির সর্বশেষ খবর বলছে, রাশিয়ার গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম বলেছে, তারা আবারও তাদের প্রধান সরবরাহ লাইন দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখবে। সরবরাহ লাইনের মেরামতকাজের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নর্ড স্ট্রিম–১ পাইপলাইন দিয়ে গতকাল বুধবার সক্ষমতার তুলনায় ২০ শতাংশ কম গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করা হয়েছে। এই নর্ড স্ট্রিম ওয়ান সরবরাহ লাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ হয়ে থাকে।

রাশিয়ার এ রকম সিদ্ধান্তে ইউরোপের সামনে বিপদ আরও বাড়ল। শীতকালের আগে ইউরোপের দেশগুলো গ্যাস মজুতকেন্দ্রগুলো ভরে রাখে। এ অবস্থায় আগামী ৭ মাসে গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমাতে বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।এমনিতেই গ্যাসের জন্য চড়া দাম দিতে হচ্ছে এশিয়া, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর গ্যাসের পাইকারি দাম বাড়তে শুরু করে। এর প্রভাব পড়েছে ভোক্তাদের জ্বালানি বিলের ওপরও।

আরও পড়ুন

দোষারোপের খেলা

বিশ্ববাসী যখন জ্বালানি ও গ্যাসের সংকটে রয়েছে, তখন দোষারোপের খেলায় মেতেছে পুতিন ও পশ্চিমা বিশ্ব। রাজায় রাজায় চলা যুদ্ধে এক ‘রাজা’ পুতিন বলছেন, বিশ্বব্যাপী গ্যাসের এ সংকটের জন্য পশ্চিমা বিশ্বের নিজের নিষেধাজ্ঞাই দায়ী। রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে খুব সহজেই পশ্চিমারা এই জ্বালানিসংকট শেষ করে দিতে পারত। আর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বারবারই বলছেন, জ্বালানি নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকে ব্ল্যাকমেইল করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একধাপ এগিয়ে জোর দিয়ে বলেছেন, পুতিন যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন গ্যাসকে। ওদিকে আবার পুতিন জেলেনস্কির দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, তিনিই রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পশ্চিমা বিশ্বকে উসকে দিয়েছেন।

দোষ কার, এ নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও রুশপন্থী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে ভারী ভারী বিশ্লেষণ। তবে দোষ যারই হোক, শেষ বিচারে প্রাণ যাচ্ছে উলুখাগড়ার। অর্থাৎ সাধারণ বিশ্ববাসীর। জ্বালানিসংকটের কারণে বাংলাদেশসহ এশিয়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ম করে লোডশেডিং, হোম অফিস, কর্মঘণ্টা কমানো, সরকারি কর্মকর্তাদের যাতায়াতে বিধিনিষেধের মতো কৃচ্ছ্রসাধন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। দেশটির টেক্সাস ও নিউইয়র্কে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আসছে শীতে জ্বালানি ছাড়া কীভাবে ঘরবাড়ি গরম রাখবে, তা নিয়ে এখন থেকেই চিন্তিত ইউরোপবাসী।

শস্য নিয়ে সংকটে কিছুটা স্বস্তি

খাবার নিয়েও চিন্তা কম নয়। বিশ্বব্যাংক জানাচ্ছে, ইউক্রেন হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ সূর্যমুখী তেলের উৎপাদক, রাশিয়া আছে দ্বিতীয় স্থানে। এই দুই দেশ মিলে বিশ্বের মোট সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে। আবার বিশ্বের মোট গমের ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ উৎপাদিত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনে।

যুদ্ধের পর রাশিয়া কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে কয়েক মাস ধরেই ইউক্রেনের বন্দরগুলোয় প্রায় দুই কোটি টন শস্য আটকে আছে। গত শুক্রবার ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে পণ্যবাহী জাহাজে করে শস্য রপ্তানির ব্যাপারে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তি হয়েছে। অবশ্য চুক্তির পরই ইউক্রেনের ওদেসা বন্দরে দেশটির সামরিক নৌযানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া।

তাই যতই বলি, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’, যুদ্ধ সহজে থামার নয়। আর বিশ্বের সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও আপাতদৃষ্টে শিগগিরই কমার সম্ভাবনা কম।

গমের জন্য আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো সাধারণত রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল। আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বলেছে, আফ্রিকা অঞ্চলের মোট গমের চাহিদার ৪০ শতাংশের সরবরাহ আসে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। তবে যুদ্ধের কারণে আফ্রিকায় তিন কোটি টন খাদ্যঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে মহাদেশটিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। নাইজেরিয়ায় পাস্তা ও রুটির মতো খাদ্যদ্রব্যগুলোর দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।একইভাবে ইয়েমেন প্রতিবছর ইউক্রেন থেকে ১০ লাখ টনের বেশি গম আমদানি করে থাকলেও এ বছর যুদ্ধের কারণে সরবরাহ কমে যায়। এতে দেশটিতে গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ময়দার দাম ৪২ শতাংশ ও রুটির দাম ২৫ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। ইউক্রেনের গমের আরেক শীর্ষ আমদানিকারক দেশ সিরিয়ায় রুটির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

শুধু আফ্রিকা নয়। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে শস্যসহ নানা পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে অন্যান্য মহাদেশের দেশগুলোকে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে খাদ্যের দাম বেড়েছে। রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

রাশিয়াকে একঘরে করার জের সারা বিশ্বে

রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরটির এক প্রতিবেদনে কলামিস্ট, রাজনৈতিক কৌশলবিদ, ফরাসি ও ইংরেজি ভাষায় পরিচালিত ভিন্নধারার টকশোর আয়োজক রাচেল মার্সডেন বলছেন, রাশিয়ার ব্যাংক, বৈদেশিক রিজার্ভসহ বাণিজ্যিক ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্র লক্ষ্য করে তড়িঘড়ি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমারা। পশ্চিমারা রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করার জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেনব্যবস্থা সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) থেকে বাদ দিয়েছে। আর তাই বিশ্বব্যাপী চলা নানা সংকটের জন্য দায়ী পশ্চিমারাই।

দাম বাড়ছে লাফিয়ে

যুদ্ধের প্রভাবে বাড়ছে তেলের দাম, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিচ্ছে। আবার খাবার তেলের দামও আকাশ ছুঁতে চলেছে। বাড়ছে সব ধরনের ধাতুর দাম। এতে উৎপাদনখরচও বাড়ছে আরেক দফা। ফলে এশিয়া, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া।

আইএমএফ

এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে কোনো সুখবর দেয়নি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএএফ। আইএমএএফের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ আর ২০২৩ সালে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।প্রতিবেদনে এ বছর মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির গড় হার দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ আর উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে ডলারের। বাংলাদেশেও প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকটের কারণে বাংলাদেশে রাজধানীসহ সারা দেশে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ে কাটছাঁট করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের যুদ্ধের জেরে ভুগছে দেশের সাধারণ মানুষ।

ডনের খবরে জানা গেছে, চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতি ও অর্থনীতি। ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা রুপির মান ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত সোমবার দেশটির আন্তব্যাংক বাজারে ১ ডলারের মান কমে দাঁড়িয়েছে ২২৯ দশমিক ৮৮ রুপি।আর শ্রীলঙ্কায় তো সংকটের শেষই নেই। রাজাপক্ষে পরিবারের গোষ্ঠীতন্ত্র, খামখেয়ালিপূর্ণ সিদ্ধান্ত, ভুল নীতি, ভুল প্রকল্প বাছাই এবং দুর্নীতির কারণেই শ্রীলঙ্কা আজকের এই অবস্থানে। দেশটির রিজার্ভ প্রায় শূন্য। ঋণের ফাঁদে আটকে পড়েছে দেশটি।

পাঁচ মাসের এই যুদ্ধের শেষ কবে, কেউ জানে না। রাশিয়া বনাম ইউক্রেন অথবা বলা যেতে পারে রাশিয়া বনাম পশ্চিমা বিশ্ব—যে যার অবস্থানে অনড়। ক্ষমতার জায়গায় একচুলও ছাড় দিতে রাজি নয় কোনো পক্ষই। দোষারোপেও কেউ কারও চেয়ে কম নয়। তাই যতই বলি, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’, যুদ্ধ সহজে থামার নয়। আর বিশ্বের সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও আপাতদৃষ্টে শিগগিরই কমার সম্ভাবনা কম।

সূত্র: বিবিসি, আরটি, রয়টার্স, এএফপি, আল জাজিরা