আবারও ‘ফসিল অব দ্য ডে’ পুরস্কার পেল জাপান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের বার্ষিক আয়োজনে আন্তর্জাতিক একটি পরিবেশ গ্রুপ জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা সামাল দেওয়ায় সবচেয়ে খারাপ পারদর্শিতা দেখানো দেশগুলোকে নিয়মিতভাবে ‘ফসিল অব দ্য ডে’ বা দিনের জীবাশ্ম পুরস্কার দিয়ে আসছে। নেতিবাচক এই পুরস্কার হচ্ছে মশকরামূলক, যার মধ্যে দিয়ে পুরস্কৃত দেশের নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, জলবায়ু পরিবর্তন সামাল দেওয়ায় তাঁদের পারদর্শিতা গ্রহণযোগ্য নয়।

জলবায়ু সম্মেলন চলাকালীন ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্যান) প্রতিদিন এক বা একাধিক দেশকে ‘ফসিল অব দ্য ডে’ পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশ হিসেবে নির্বাচিত করে।

এবারের সম্মেলন স্থল দুবাইতে রোববার (৩ ডিসেম্বর) ক্যানের প্রচারিত ঘোষণায় জাপানকে পুরস্কার বিজয়ী দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র এবং নিউজিল্যান্ডকেও নেতিবাচক এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

গত ৩০ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে শুরু হয়েছে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন। চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। গত শুক্রবার এই সম্মেলনে ভাষণ দেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। তিনি বলেছেন, পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে উত্তরণের চেষ্টায় টোকিও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছে। কিশিদা আরও বলেছেন, নতুন কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি জাপান বাতিল করে দেবে। তবে কবে থেকে এটা কার্যকর করা হবে এবং চলমান কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কে তিনি অবশ্য কিছুই উল্লেখ করেননি।

ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এ জন্য জাপানকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করেছে। বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেছে, এশিয়া মহাদেশজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখা ও উৎসাহিত করার মধ্য দিয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি তিন গুণ বৃদ্ধি করে নেওয়ার বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জন জাপান কঠিন করে তুলছে। উল্লেখ্য, এশিয়ার অনেক দেশেই কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জাপান এখনো সহায়তা প্রদান করে আসছে।

জাপানের একটি পরিবেশ সংগঠন এফওই জাপানের প্রতিনিধি হিরোকি ওসাদা জাপানের পক্ষ থেকে ‘ফসিল অব দ্য ডে’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি বলেছেন, এশিয়া মহাদেশজুড়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ধারণা কার্যকর করায় জাপানের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা থাকলেও জীবাশ্ম জ্বালানি মুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় অবশিষ্ট বিশ্বের চাইতে টোকিও অনেক পেছনে পড়ে আছে। তিনি আশা করছেন, যত দ্রুত সম্ভব জাপান এই নীতি পরিবর্তন করবে।

এর আগে ২০১৯, ২০২১ এবং ২০২২ সালের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনেও জাপানকে ‘ফসিল অব দ্য ডে’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুর্ঘটনার পর দেশের অধিকাংশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হওয়ায় কয়লা এবং অশোধিত তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর জাপান আবারও নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।