মাঝ আকাশে উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ত্রুটি, নিয়ন্ত্রণকক্ষে জরুরি কল
মাঝ আকাশে হঠাৎই কানতাস এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। উড়োজাহাজটি থেকে জরুরি ভিত্তিতে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষে মে ডে অ্যালার্ট (বিপদ সংকেত) পাঠাতে থাকেন পাইলট। বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স সেবাও প্রস্তুত রাখা হয়। অবশেষে দ্বৈত ইঞ্জিনের উড়োজাহাজটি শুধু একটি সচল ইঞ্জিনের সহায়তায় অবতরণ করতে সক্ষম হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, আজ বুধবার সিডনি বিমানবন্দরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
কানতাসের বিবৃতিতে বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিগামী কিউএফ১৪৪ ফ্লাইটটিতে ১৪৫ যাত্রী ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এএফপির এক প্রতিনিধি বলেন, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি সিডনি বিমানবন্দরের রানওয়েতে নিরাপদে অবতরণ করেছে। প্রকৌশলীরা এখন উড়োজাহাজটির সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখবেন।
বিমান সংস্থাটি তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা শনাক্ত করতে পারেনি। তবে তারা বলছে, উড্ডয়নের দুই ঘণ্টা পর উড়োজাহাজটির একটি ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয়। কানতাসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চলন্ত ফ্লাইটে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা বিরল। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের যাত্রীদের জন্য তা উদ্বেগ তৈরি করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপদে উড়োজাহাজ অবতরণ করানোর ক্ষেত্রে আমাদের পাইলটেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। উড়োজাহাজটি যেন এক ইঞ্জিনের ওপর নির্ভর করেও বাড়তি সময় উড়তে পারে, তা মাথায় রেখে এটি নির্মিত হয়েছে।’
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বিভাগের মুখপাত্র বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যবর্তী তাসমান সাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় উড়োজাহাজটি থেকে থেকে মে ডে সংকেত পাঠানো হয়েছিল। এমন অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা বিভাগের পক্ষ থেকে জরুরি পরিকল্পনা নেওয়া হয়। চিকিৎসাকর্মীদের সেখানে নিযুক্ত করা হয়। বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রস্তুত রাখা হয়।
কানতাস কর্তৃপক্ষ বলছে, ফ্লাইটটি অবতরণের আগে মে ডে অ্যালার্ট (জরুরি বিপদ সংকেত) নামিয়ে পিএএন (পসিবল অ্যাসিস্ট্যান্স নিডেড-সম্ভাব্য সহযোগিতা প্রয়োজন) সতর্কতা জারি করা হয়।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মে ডে কলের মানে হলো উড়োজাহাজটি মহা এবং অনিবার্য বিপদের মধ্যে আছে এবং এর জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্যমতে, পিএএন দিয়ে এমন পরিস্থিতি বোঝানো হয় যে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
কানতাস এয়ারলাইনস বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ বিমান সংস্থাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বিমান সংস্থাটির কোনো উড়োজাহাজ কোনো ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি।
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ হলো দুই ইঞ্জিনে পরিচালিত উড়োজাহাজ। তবে শুধু একটি ইঞ্জিন সচল থাকলেই এটি নিরাপদে অবতরণ করতে পারে।