৫৭ দেশে অমিক্রনের অতি সংক্রামক উপধরন: ডব্লিউএইচও
করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক অমিক্রনের একটি উপধরন (বিএ.২) বিশ্বের ৫৭টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।
ইতিমধ্যে কিছু গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে, অমিক্রনের মূল ধরনের চেয়ে উপধরন ‘বিএ.২’ অনেক বেশি সংক্রামক হতে পারে।
প্রায় ১০ সপ্তাহ আগে আফ্রিকায় প্রথম অমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়। শনাক্তের পর খুব দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে অমিক্রন। এটি প্রাধান্যশীল ধরন হয়ে ওঠে।
অনেক মিউটেশনের অমিক্রনের উচ্চ সংক্রমণক্ষমতা রয়েছে। অমিক্রনের আবার বেশ কিছু উপধরন তৈরি হয়েছে। এগুলো হলো বিএ.১, বিএ.১.১, বিএ.২ ও বিএ.৩। এই উপধরনগুলোর মধ্যে বিএ.২ মূল ধরনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক হতে পারে বলে বিভিন্ন গবেষণায় আভাস মিলেছে।
মহামারিসংক্রান্ত সর্বশেষ সাপ্তাহিক তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে গতকাল ডব্লিউএইচও জানায়, গত মাসে করোনার যত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই অমিক্রন। এর মধ্যে বিএ.১, বিএ.১.১, বিএ.২ ও বিএ.৩ রয়েছে।
করোনার জিনোমের উন্মুক্ত বৈশ্বিক তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটাতে (জিআইএসএআইডি) অমিক্রনের যেসব তথ্য আপলোড করা হয়েছে, তার ৯৬ শতাংশই বিএ.১ ও বিএ.১.১। তবে বিএ.২ উপধরনটি শনাক্তের হারও ক্রমাগত বাড়তে দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচও জানায়, জিআইএসএআইডির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিএ.২ উপধরনটি বিশ্বের ৫৭টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। কিছু কিছু দেশে মোট শনাক্ত অমিক্রনের অর্ধেকের বেশি বিএ.২।
ডব্লিউএইচও বলছে, অমিক্রনের উপধরনগুলোর মধ্যকার পার্থক্য নিয়ে এখন পর্যন্ত খুব কম তথ্যই জানা গেছে। এগুলোর সংক্রমণক্ষমতাসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করতে আরও গবেষণার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
ডব্লিউএইচওর করোনাবিষয়ক শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভে সাংবাদিকদের বলেন, অমিক্রনের উপধরনগুলো–সম্পর্কিত তথ্য খুব কম আছে। তবে প্রাথমিকভাবে পাওয়া কিছু তথ্য অনুযায়ী, বিএ.১ উপধরনটির তুলনায় বিএ.২ উপধরনের সংক্রমণ হার খানিকটা বেশি।
করোনার ডেলটা ধরনের তুলনায় অমিক্রন বেশি সংক্রামক বলে পরিচিত। তবে অমিক্রনে রোগের তীব্রতা কম।
মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেন, অমিক্রনের বিএ.২ উপধরনটির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটার কোনো আভাস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তবে মারিয়া ভ্যান কেরখোভে মনে করেন, ধরন-উপধরনভেদে করোনা এখনো বিপজ্জনক রোগের পর্যায়ে রয়ে গেছে। তাই মানুষের উচিত সংক্রমিত হওয়া এড়াতে সতর্ক থাকা।
মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেন, মানুষকে বোঝাতে হবে, সতর্ক করতে হবে যে ভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত আছে। ক্রমাগত ভাইরাসের বিবর্তন ঘটছে। যে ধরনেরই বিস্তার ঘটুক না কেন, ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।