নতুন নাম পাচ্ছে মাঙ্কিপক্স: ডব্লিউএইচও
বিশ্বে সম্প্রতি নতুন করে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। রোগটির নতুন নাম দিতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নাম ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছে বৈশ্বিক সংস্থাটি। খবর বিবিসির।
ভাইরাস এবং এটি যে রোগ সৃষ্টি করে, সে বিষয়ে ‘বৈষম্যহীন এবং অপবাদ আরোপ করে না এমন নাম দেওয়া জরুরি প্রয়োজন’ জানিয়ে গত সপ্তাহে ৩০ জন বিজ্ঞানী লিখিত আহ্বান জানান। এরপর এই উদ্যোগ নেয় ডব্লিউএইচও।
তাঁরা আরও বলেন, ভাইরাসটিকে অব্যাহতভাবে আফ্রিকান বলে উল্লেখ করা যথার্থ নয়, এবং বৈষম্যমূলক। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার ৬০০ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয়ভাবে প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া দেশগুলোতে আক্রান্ত ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া ৩২টি দেশে অবশ্য আক্রান্ত কারও মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।
মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবকে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী সপ্তাহে জরুরি বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
জাতিসংঘের এই সংস্থার দেওয়া এটিই সর্বোচ্চ সতর্কতা। এর আগে সোয়াইন ফ্লু, পোলিও, ইবোলা, জিকা এবং কোভিডের ক্ষেত্রে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক। এ জন্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধির অধীন আমি আগামী সপ্তাহে জরুরি কমিটির বৈঠক আহ্বানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৈঠকে এই প্রাদুর্ভাব জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পর্যায়ে পড়ে কি না, তা পর্যালোচনা করা হবে।’
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের কারণে মাঙ্কিপক্স হয়। গুটিবসন্ত ঘরানার ভাইরাস এটি। অবশ্য এটি অনেক কম গুরুতর। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ মৃদু এবং সাধারণ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।
বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের নতুন নাম এইচএমপিএক্সভি রাখার প্রস্তাব করেছেন। তবে ডব্লিউএইচও এ নিয়ে কী ভাবছে, সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিশ্বে অস্বাভাবিকভাবে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস ছড়িয়েছে। এর আগের সময়গুলোতে আফ্রিকার কিছু অংশেই এর প্রাদুর্ভাব সীমাবদ্ধ ছিল। বানর নয়, একজাতীয় ইঁদুরই এই ভাইরাসের বাহক বলে মনে করা হয়।
এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে শরীরে অনেকটা জলবসন্তের মতো ফুসকুড়ি দেখা দেয়। কেউ রোগীর সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত হতে পারেন। দৈহিক মিলনের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ানোর কথা আগে কখনো বলা হয়নি। তবে উপসর্গ দেখা দিলে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৫৮ সালে এ ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় ল্যাবরেটরিতে রাখা বানরের শরীরে। এ কারণেই এটি মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিতি পায়। ১৯৭০ সালে আফ্রিকার দেশ ডিআর কঙ্গোতে প্রথমবারের মতো মানবদেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে বিক্ষিপ্তভাবে এর সংক্রমণ ঘটতে দেখা গেছে।