'দেশি সফটওয়্যারে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া গর্বের'
দেশের উদ্যোক্তাদের তৈরি বিভিন্ন সফটওয়্যার ও প্রকল্প বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদ্যোগের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে স্বীকৃতি পাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ভিয়েতনামের হা লং বে শহরের ডায়মন্ড প্যালেসে এশিয়ার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের অস্কারখ্যাত এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যাওয়ার্ডে (অ্যাপিকটা) ৩টি চ্যাম্পিয়ন ও ৫টি মেরিট পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের ৫টি উদ্যোগ।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘এবার তিনটি চ্যাম্পিয়ন এবং পাঁচটি মেরিট সম্মাননা অর্জন করেছি। এটা পরিষ্কার ইঙ্গিত দেয় যে প্রতিনিয়ত আমরা ভালো করছি।’
পুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রাইডসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার ইকবাল বলেন, ‘আপনি যখন আপনার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং আপনি জেতেন, তখন এর অনুভূতিটি আলাদা। যখন আপনার পণ্য বিশ্বের শীর্ষ পণ্যগুলোর সঙ্গে তুলনা করে এবং আপনি দেখতে পেলেন যে আপনার পণ্যটি সবচেয়ে ভালো, তখন আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আমি আমার দলের জন্য গর্বিত।’
এবার ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩২টি প্রকল্প এবং অ্যাপিকটার বিচারকমণ্ডলীর ৯৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে ভিয়েতনামের হা লং বে-তে ১৮-২২ নভেম্বর অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডসে ১৬টি দেশের পাশাপাশি অংশ নেয় বাংলাদেশ। সেখান থেকে জয়ী ৮ প্রকল্প হলো:
এক শপ: বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের প্রকল্প এক শপ। একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)-এর বাস্তবায়নে প্রকল্পটি কনজিউমার মার্কেটপ্লেস অ্যান্ড রিটেইল ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দেশের ই-কমার্সগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ই-কমার্স সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রকল্পটি।
সূর্যমুখী প্রাণী সেবা: সূর্যমুখী লিমিটেড গবাদিপশুর জন্য ইনস্যুরেন্স বা বিমা ব্যবস্থা প্রকল্প প্রাণী সেবা। এবারের আয়োজনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল (জেনারেল) বিভাগে পুরস্কার জিতেছে প্রকল্পটি।
পিজি ট্র্যাকার: বন্ডস্টাইনের পিজি ট্র্যাকার মূলত আইওটি প্রকল্প। টেকনোলজি (আইওটি) ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিজি ট্র্যাকার। পোর্টেবল জেনারেটরকে (পিজি) আইওটি প্রযুক্তির মাধ্যমে মনিটরিং এবং জেনারেটরের তথ্য বিশ্লেষণ করে অধিক কার্যকর এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী উপায়ে সেগুলোর ব্যবহারে ভূমিকা রাখবে বন্ডস্টাইনের উদ্ভাবনটি।
দূতাবাস: পাবলিক সেক্টর (গভর্নমেন্ট অ্যান্ড সিটিজেন সার্ভিস) ক্যাটাগরিতে মেরিট পজিশনে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশের দুটি প্রকল্প। এগুলো হলো জাতীয় তথ্যকেন্দ্র ৩৩৩ এবং দূতাবাস অ্যাপ। নাগরিকদের বিভিন্ন বিষয়ে তাৎক্ষণিক তথ্য সহায়তা দিতে কাজ করছে জাতীয় তথ্যকেন্দ্র ৩৩৩। দেশের বাইরে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সেবা ডিজিটাল মাধ্যমেই পৌঁছে দিতে কাজ করছে দূতাবাস অ্যাপ।
প্রাইড কাট: প্রাইডসিস আইটি লিমিটেডের তৈরি প্রাইড কাট সফটওয়্যার প্রকল্পটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ক্যাটাগরিতে মেরিট পুরস্কার জিতেছে। তৈরি পোশাকশিল্পের কাটিং ক্ষেত্রের উপযোগী এ সফটওয়্যার ফেব্রিকস সাশ্রয় করতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অটোমেশনে নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সেবা দিয়ে থাকে প্রাইডসিস আইটি লিমিটেড।
সিগমাইন্ড: ইনটেলিজেন্ট কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও অ্যানালিটিকস কনজিউমার (মার্কেটপ্লেস) ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়ে মেরিট পজিশন অর্জন করেছে সিগমাইন্ডের প্রকল্প ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও অ্যানালিটিকস। ইন্টারনেট অন থিংস এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহায়তায় মূলত চলমান চিত্র, অর্থাৎ ভিডিও থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এই সিস্টেম।
সিএমইডি: ইনক্লুশন (হেলথ অ্যান্ড ওয়েল বিয়িং) ক্যাটাগরিতে মেরিট পজিশন অর্জন করেছে সিএমইডি ডিজিটাল প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস মডেল। ইন্টারনেট অন থিংস এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর এই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার মূল ওষুধ ক্লাউড সার্ভার। প্রতিরোধকারী বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবার মনিটরিং স্মার্ট এবং ডিজিটাল উপায়ে করে থাকে এই প্ল্যাটফর্ম।