৫৫ সেকেন্ডের ভাইরাল সেই ভিডিও বিক্রি হলো সাড়ে ছয় কোটি টাকায়
ভিডিওটি দুই সহোদরের শৈশবের। ছোট ভাই চার্লি বড়জনের হাত টেনে নিয়ে আলতো করে কামড়ে দেয়। বড় ভাই হ্যারি তাতে মজা পেয়ে আবারও হাত বাড়িয়ে দেয়। তবে এবার আর আলতো নয়, চার্লি বসায় জোরালো কামড়। হ্যারির তখন কাঁদো কাঁদো অবস্থা। তবে খানিক পর দুজনের মুখেই ফুটে ওঠে হাসি। এই হলো ইউটিউবে ‘চার্লি বিট মাই ফিঙ্গার’ ভিডিও।
ভাইরাল শব্দটি ভাইরাল হওয়ার আগের যুগের ভাইরাল ভিডিও সেটি। সঙ্গে জুড়ে আছে একটুকরো ইতিহাস। ইন্টারনেটের জগৎজুড়ে মানুষজন সেটি নিয়ে আলোচনা করত একসময়। আদুরে ভিডিওটি দেখে ভালো লাগেনি, এমন পাষাণ হৃদয়ের মানুষ পাওয়াও ছিল মুশকিল। সেসব অবশ্য পুরোনো ঘটনা।
নতুন খবর হলো, মাত্র ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি বিক্রি হলো ৭ লাখ ৬০ হাজার ৯৯৯ ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি।
বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ডেভিস-কার পরিবার ভিডিওটি এনএফটি বা নন-ফানজিবল টোকেন হিসেবে নিলামে তোলে। গত রোববার নিলামের শেষ দিকে নাটকীয়ভাবে সেটির দাম বেড়ে যায়। অনলাইনে ছদ্মনামে দুটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ভিডিওটি পাওয়ার লড়াই চলে। ‘মিমমাস্টার’কে হারিয়ে ‘থ্রিএফমিউজিক’ জিতে নেয় সেটি।
২০০৭ সালে প্রথম ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোডের পর থেকে ৮৮ কোটিবারের বেশি দেখা হয়। নিলাম শেষে ২৩ মে ভিডিওটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার কথা। তবে গতকাল সোমবার সন্ধ্যাতেও সেটি ইউটিউবে দেখা গেছে।
এনএফটি কী
এনএফটি অনেকটা সনদের মতো। ডিজিটাল কিছুর মালিকানার সনদ বলা যেতে পারে। এনএফটিতে কোনো ডিজিটাল কনটেন্টের একটিই মালিকপক্ষ থাকতে পারে, একাধিক নয়। তবে সেটি বিনিময়যোগ্য। এভাবে ভাইরাল ভিডিও, মিম, টুইট ইত্যাদি বিক্রি করা হয়, যেন সেগুলো শিল্পকর্ম। অর্থাৎ ভাইরাল ভিডিও ক্লিপের মালিক হলে সেটি এনএফটি হিসেবে চড়া দামে বিক্রির সুযোগ আছে বলা যায়।
পেছনে আগুনে পুড়ছে বাড়ি, সামনে তরুণীর মুখে হাসি—এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল এর আগে। ‘ডিজাস্টার গার্ল মিম’ নামের সে ছবি এনএফটি হিসেবে বিক্রি হয়েছিল ৪ লাখ ৭৩ হাজার ডলারে।
‘চার্লি বিট মাই ফিঙ্গার’ ভিডিও ক্লিপটি নিলামে কেনার পর ছদ্মনামের মালিক সেটি ব্যবহারের অধিকার পাবেন। নিলামের ওয়েব পেজের বিবরণ অনুযায়ী, নতুন মালিক হ্যারি ও চার্লিকে দিয়ে পুরোনো ভিডিওটির নতুন একটি সংস্করণ বানানোর সুযোগও পাবেন। ভিডিওটি ধারণ করার সময় হ্যারি ও চার্লির বয়স ছিল যথাক্রমে তিন ও এক বছর। আর এখন হ্যারির বয়স ১৭, চার্লির ১৫।
দুই ভাইয়ের বেড়ে ওঠার ছোট ছোট মুহূর্ত ধারণ করতে গিয়ে ২০০৭ সালে ভিডিওটি করেন হ্যারি-চার্লির বাবা হাওয়ার্ড। সেটি ই-মেইলে পাঠাতে না পেরে আপলোড করেন ইউটিউবে। কে জানত সেটি এভাবে ছড়িয়ে পড়বে, আর এত দিন পর এমন চড়া দামে বিক্রি হবে। ভিডিওটি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ তাঁরা কী করবেন, তা জানানো হয়নি।