১৭ বছর পর নতুন পদ পেলেন মার্ক জাকারবার্গ

মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক ইনকরপোরেটেডের নাম বদলে ‘মেটা’ রাখার ঘোষণা দেন গতকাল বৃহস্পতিবার
মেটা/রয়টার্স

মার্ক জাকারবার্গ তখন হার্ভার্ডে পড়েন। বন্ধুদের সঙ্গে ডরমিটরিতে ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি চালু করলেন দ্য ফেসবুক ডটকম। সে নামের সামনে থেকে একসময় ‘দ্য’ বাদ পড়ল, ফেসবুকও হার্ভার্ডের গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক হয়ে উঠল, জাকারবার্গের সম্পদও তরতরিয়ে বাড়তে থাকল। তবে তিনি সেই যে ফেসবুক প্রধানের পদে আসীন হলেন, ১৭ বছরে এর আর হেরফের হলো না।

এবার আসা যাক গতকাল বৃহস্পতিবারের ঘোষণায়। ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে জাকারবার্গ বললেন, ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে করা হবে ‘মেটা’। মেটাভার্স নামের ভার্চ্যুয়াল জগতে মনোনিবেশ করতেই এমন নাম গ্রহণ বলেও জানালেন তিনি। এখানে বোধ হয় একটু খোলাসা করার দরকার আছে।

ফেসবুক ইনকরপোরেটেড হলো মূল প্রতিষ্ঠান। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘদিন সে প্রতিষ্ঠানের একমাত্র সেবা ছিল ‘ফেসবুক’ নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। মুকুটে পালক যোগ হওয়ার মতো প্রতিষ্ঠানটির সেবার তালিকায় একে একে যোগ হলো ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, অকুলাস, পোর্টাল, ওয়ার্কপ্লেস। এদিকে মেসেঞ্জারও আলাদা হলো। আর শুরু থেকেই মার্ক জাকারবার্গ ছিলেন পুরো ফেসবুক ইনকরপোরেটেডের প্রধান।

যেহেতু মূল প্রতিষ্ঠান ফেসবুক ইনকরপোরেটেডের নাম বদলে মেটা করা হলো, ১৭ বছর পর মার্ক জাকারবার্গের পদেও পরিবর্তন এল। এখন তিনি মেটার সিইও ও চেয়ারম্যান। অবশ্য সবকিছু আগের মতোই আছে, প্রতিষ্ঠানেও তাঁর নিয়ন্ত্রণ অটুট বলে নিজেই জানিয়েছেন দ্য ভার্জকে। এমনটা জানানোর কারণ হলো, ২০১৫ সালে গুগলের প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের সময় সব সেবাকে ‘অ্যালফাবেট’ নামের মাতৃপ্রতিষ্ঠানের অধীনে নেওয়া হয়। সে সময় গুগলের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা নতুন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। ফেসবুকে তেমন কিছু হচ্ছে না।

আরও পড়ুন
যেমন হবে মেটাভার্সের ভার্চ্যুয়াল দুনিয়া
মেটা

যা–ই হোক, মেটাভার্সের ধারণা নতুন নয়। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত মার্কিন লেখক নিল স্টিফেনসনের লেখা ‘স্নো ক্র্যাশ’ উপন্যাসের চরিত্রগুলো বাস্তব দুনিয়া ধ্বংস হয়ে গেলে ভার্চ্যুয়াল এক জগতে প্রবেশ করে। তবে নতুন না হলেও মূলধারার আলোচনায় আনার স্বীকৃতি জাকারবার্গই পাবেন। মেটাভার্স তৈরিতে কেবল প্রথম বছরেই তিনি অন্তত এক হাজার কোটি ডলার খরচ করার কথা জানিয়েছেন এরই মধ্যে।

আগামী এক দশকে বেশির ভাগ মানুষ ইন্টারনেটে যুক্ত ত্রিমাত্রিক ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ায় সময় কাটাতে শুরু করবেন বলেও বিশ্বাস করেন তিনি। আভাটার কিংবা হলোগ্রাম প্রযুক্তির সাহায্যে চট করে অনেক দূরে অবস্থিত কারও সঙ্গে দেখা করা যাবে সেখানে। আর এর পেছনে থাকছে হরাইজন নামের সফটওয়্যার। অগমেনটেড ও ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ করবে সেটি।

জাকারবার্গ যদিও বলছেন, নাম পরিবর্তনের পেছনে দুর্নাম ঘোচানোর কোনো চেষ্টা তাঁর নেই। তা থাকুক বা না থাকুক, এমন বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার মতো সাহস দেখানোর জন্য বাহবা তো তিনি পেতেই পারেন।