সরকার ফেসবুকের কাছে আরও বেশি তথ্য চাইছে
ফেসবুক ব্যবহারকারী সম্পর্কে তথ্য পেতে ফেসবুকের কাছে অনুরোধ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে তথ্য চাওয়ার হার ১৬ শতাংশ বেড়েছে। ফেসবুক তাদের চলতি বছরের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সরকারের পক্ষ থেকে তারা ১ লাখ ২৮ হাজার ৬১৭টি অনুরোধ পেয়েছে, যা ২০১৩ সালে এ প্রতিবেদন চালু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ।
প্রতি ছয় মাস পরপর ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে কোন দেশের সরকার ফেসবুকের কাছে কী ধরনের অনুরোধ জানায়, তা তুলে ধরা হয়। তবে কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়, তা উল্লেখ করা হয় না।
ফেসবুকের এবারের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৯৫টি অনুরোধ করা হয়েছে। এ অনুরোধের মাধ্যমে ১২৩টি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৮০টি জরুরি অনুরোধ ও ১৫টি আইনি প্রক্রিয়ায় অনুরোধ করা হয়। ফেসবুক সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ৪৩ শতাংশ তথ্য সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে জরুরি অনুরোধে ৪৮ শতাংশ ও আইনি প্রক্রিয়ায় ২০ শতাংশ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে ফেসবুক গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে ফেসবুকের কাছে করা অনুরোধে সাড়া দিয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালে জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ফেসবুকের কাছে ১৪৯টি অনুরোধে ১৯৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছিল সরকার। এর মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় ১৯টি আর ১৩০টি জরুরি অনুরোধে সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য চাওয়া হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ৪৪ শতাংশ তথ্য সরবরাহ করেছিল। প্রতিবেদনের লিংক
ফেসবুকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে সবচেয়ে বেশি অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পক্ষ থেকে ৫০ হাজার ৭৪১টি অনুরোধ পেয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে তারা তথ্য সরবরাহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশ এসেছে, যাতে ওই অনুরোধ সম্পর্কে ব্যবহারকারীকে জানাতে পারেনি ফেসবুক।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি নির্দেশ থাকলেও তারা প্রথমবারের মতো ১১টি ন্যাশনাল সিকিউরিটি লেটার্স (এনএসএল) সামনে আনতে পেরেছে। জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগে দেওয়া এমন নির্দেশের কারণে তথ্য প্রকাশ করতে পারে না ফেসবুক।
এবারের ফেসবুক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১৫টি দেশে ৬৭ বার ফেসবুক বন্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের শেষ ৬ মাসে ৯টি দেশে ৫৩ বার ফেসবুক বন্ধের ঘটনা ঘটেছিল। এ ছাড়া ১১৬ কোটি কনটেন্ট ফেসবুক এ বছরেই সরিয়ে ফেলেছে, যা গত বছরের শেষ ছয় মাসে ছিল ৫৮ লাখ। ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গ করায় কনটেন্ট সরিয়ে ফেলে ফেসবুক।
ফেসবুক প্রথমবারের মতো তাদের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে ইনস্টাগ্রামকে যুক্ত করেছে। ইনস্টাগ্রাম থেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার কনটেন্ট সরিয়েছে ফেসবুক।