লাখো ইনস্টাগ্রাম পাসওয়ার্ড ফাঁস হওয়ার ঝুঁকিতে
এবার ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ। ফেসবুকের পর এবার ইনস্টাগ্রামের পাসওয়ার্ড সুরক্ষা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে ফেসবুককে। লাখো ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ সার্ভারে এমনভাবে সংরক্ষণ করা ছিল, যাতে তা সবাই পড়তে পারত।
প্রায় ১৫ লাখ নতুন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ই–মেইল কনটাক্ট লিস্ট অনিচ্ছাকৃতভাবে ডাউনলোড করার বিষয়টি স্বীকার করার পরের দিনই ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ নিয়ে ওই দুঃসংবাদ দেয়।
বিষয়টি অবশ্য বেশ চুপিসারে জানিয়েছে ফেসবুক। আলাদা ব্লগ পোস্টের বদলে তারা পুরোনো এক ব্লগ পোস্টের সঙ্গে তথ্য যুক্ত করে দিয়েছে। প্রায় এক মাস আগে পুরোনো ওই ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করে ফেসবুক। ওই পোস্টে ফেসবুক স্বীকার করে যে তারা একটি নিরাপত্তা ত্রুটি মেরামত করেছে। এতে লাখো ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড সহজে পড়া যায়—এমন ফরম্যাটে সংরক্ষণ করা ছিল এবং তা ফেসবুক কর্মীরা সহজে পড়ার সুযোগ পেতেন। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করে, তাদের অভ্যন্তরীণ সার্ভারে তথ্য সংরক্ষণ করা ছিল বলে বাইরের কারও পড়ার সুযোগ ছিল না।
এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৬০ কোটি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড ফেসবুকের ২০ হাজার কর্মীর কাছে উন্মুক্ত ছিল। নিরাপত্তা গবেষক ব্রায়ান ক্রেবস ফেসবুকের তথ্য সুরক্ষা ব্যর্থতার এ খবর ফাঁস করেন। প্রত্যেক ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড ফেসবুকে সাধারণত এনক্রিপটেড বা সাংকেতিকভাবে থাকার কথা, যাতে অন্য কেউ সেগুলো দেখতে না পারে।
কিন্তু ক্রেবস জানান, এই ৬০ কোটি পাসওয়ার্ড সাধারণ টেক্সট আকারে ছিল। ফলে, ফেসবুকের ২০ হাজার কর্মীর যেকেউ চাইলেই এসব পাসওয়ার্ড দেখতে পারতেন।
ফেসবুক জানিয়েছে, কয়েক কোটি ফেসবুক লাইট ব্যবহারকারী, লাখ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং হাজার হাজার ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড এভাবে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে ছিল। গত জানুয়ারিতে এসব ত্রুটি তাদের নজরে আসার পর তা সমাধান করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক স্বীকার করে, ফেসবুকের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামের ক্ষেত্রেও লাখো অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড উন্মুক্ত ছিল। তদন্তে দেখা গেছে, এসব পাসওয়ার্ড অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়নি। বিষয়টি ব্যবহারকারীকে নোটিফিকেশন দিয়ে জানানো হবে।
ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য অনিরাপদ ব্যবস্থাপনার জন্য ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে যাতে দায়ী করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রকেরা।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেডারেল ট্রেড কমিশন ও ফেসবুকের মধ্যে জাকারবার্গের দায়দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে।