রোগীর ব্যবস্থাপত্র লেখার সফটওয়্যার
চিকিৎসক কম্পিউটারেই লিখতে পারবেন রোগীর ব্যবস্থাপত্র। আর সে কাজের জন্য ইজিপ্রেস নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছেন সৈয়দ তাকশেদ করিম ও জুবায়ের আহমেদ। এটি রোগী ব্যবস্থাপনার কাজে ও ব্যবস্থাপত্র তৈরিতে চিকিৎসকেরা কাজে লাগাতে পারবেন। হাতে লেখা ব্যবস্থাপত্রের পরিবর্তে ডিজিটাল সুবিধা কাজে লাগিয়ে সহজে ব্যবস্থাপত্র লেখার উদ্দেশ্যেই ইজিপ্রেস নামের এই উদ্যোগ। ৭ জুলাই সফটওয়্যারটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে।
এরই মধ্যে প্রায় ৪০০ জন চিকিৎসক নিবন্ধন করে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা শুরু করেছেন। সহ-উদ্যোক্তা জুবায়ের আহমেদ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। জুবায়ের বলছিলেন, ‘এখন স্মার্ট যুগ। আধুনিক পদ্ধতিতে রোগীর ব্যবস্থাপনা করতে চান চিকিৎসকেরা। ইজিপ্রেস চালুর পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছি।’
ইজিপ্রেসের আরেক উদ্যোক্তা সৈয়দ তাকশেদ করিম যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। কানাডায় অ্যারোস্পেস প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করেছেন। জুবায়ের ও তাকশেদ দুজন বন্ধু। পরিচয় ঢাকার নটর ডেম কলেজে পড়ার সময়। এ বছরের শুরুতে এই ইজিপ্রেসের ধারণা নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেন। বর্তমানে ঢাকার গুলশানের অফিসে সাতজন কর্মী মিলে এই সফটওয়্যারের কাজ চলছে। কারিগরি কাজ ছাড়াও তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে কাজ করছেন তাঁরা।
জুবায়ের জানালেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। তাঁরা চান, ২০১৯ সালের মধ্যে ২৫ হাজার চিকিৎসকের কাছে ইজিপ্রেস সফটওয়্যারটি পৌঁছে দিতে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসকেরাই শুধু এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারবেন। আর তা ব্যবহার করতে চাইলে এর গ্রাহক হতে হবে। অবশ্য শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা এটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে বিএমডিসিতে তাঁদের নিবন্ধন হয়ে গেলে গ্রাহক হতে হবে।
সফটওয়্যারটির উল্লেখযোগ্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে, ওষুধের ডেটাবেস। ওষুধের নাম মুখস্থ না করে ডেটাবেস থেকে বাছাই করে নিলেই হবে। এই তথ্যভান্ডারে নতুন ওষুধের নাম যোগ করা যাবে। সফটওয়্যারটি দিয়ে আগে থেকে ব্যবস্থাপত্রের টেম্পলেট তৈরি করে রাখা যাবে। ব্যবস্থাপত্র চিকিৎসকের অ্যাকাউন্টে থাকবে। রোগীর সব তথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে। রোগীর তথ্য থাকায় রোগ নির্ণয় ও বিশ্লেষণে চিকিৎসকের সুবিধা হবে। ভবিষ্যতে সফটওয়্যারটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা।
সফটওয়্যারটি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন ইজিপ্রেস অ্যাকাউন্ট, একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ ও ব্যবস্থাপত্র ছাপানোর জন্য একটি প্রিন্টার। সফটওয়্যারটি যথেষ্ট ব্যবহারবান্ধব ও নিরাপদ দাবি করে জুবায়ের আহমেদ বলেন, যেহেতু চিকিৎসকের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। তাই সফটওয়্যারটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সফটওয়্যারটি আরও উন্নত করার পাশাপাশি আরও বেশিসংখ্যক চিকিৎসকের কাছে এটি নিয়ে যেতে চান উদ্যোক্তারা।
সফটওয়্যার সম্পর্কে জানা যাবে www.easypres.com ঠিকানার ওয়েবসাইটে।