মেয়েকে কী শেখাচ্ছেন ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ

ফেসবুকে আজ শুক্রবার একটি ছবি পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। ল্যাপটপের পর্দায় গভীর মনোযোগে কিছু করার চেষ্টা করছে তাঁর দুই মেয়ের একজন। ছবিতে মুখ দেখা যাচ্ছে না, সম্ভবত বড় মেয়ে ম্যাক্সিমা।

জাকারবার্গের শিরোনাম থেকে বোঝা গেল, এই পাঁচ বছর বয়সেই ম্যাক্সকে কোডিং শেখানোর চেষ্টা করছেন তিনি। লিখেছেন, ‘শিশুদের কোড (প্রোগ্রামিং সংকেত) করতে শেখানোর জন্য কানো চমৎকার।’

খানিকটা গুগল করতেই কানোর আদ্যোপান্ত মিলল। সব বয়সীদের কথা লিখলেও মূলত শিশুদের প্রযুক্তিজ্ঞানের হাতেখড়ি দেওয়া যায় কানোর সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে। ছবিতে জাকারবার্গ কানোর সফটওয়্যারের মাধ্যমে ম্যাক্সকে সহজে কোডিংয়ের প্রাথমিক ধারণা দিচ্ছিলেন।

কোডিং বলতে আমরা যেমন প্রোগ্রামিংয়ের হিজিবিজি ভাষা বুঝি, কানো তেমন নয়। এতে শেখানো হয় ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ পদ্ধতিতে। অর্থাৎ কোনো কমান্ড টেনে এনে একের পর এক সাজানোর মাধ্যমে। ব্যাপারটা সহজ বলেই শিশুরা মনোযোগ ধরে রাখতে পারে, কাজটা আনন্দের সঙ্গে করে।

কানোর কাজের ধরন বোঝাতে সহজ একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। মনে করুন আপনি বসার ঘরের সোফায় বসে আছেন। চায়ের তেষ্টা পেয়েছে। আপনার অভিযান হলো এক কাপ চা বানানোর জন্য রান্নাঘরে চুলার কাছে যাওয়া।

করণীয় ধাপগুলোর শুরুতেই আছে, সোফা থেকে ওঠা। এরপর হেঁটে বসার ঘরের দরজা দিয়ে বেরিয়ে ডানে মোড় নিতে হবে। এরপর হয়তো আট কদম এগিয়ে বাঁয়ে রান্নাঘরের দরজা পাবেন। আর তিন কদম এগোলে চুলার কাছে পৌঁছাবেন।

এমন ছোট ছোট অভিযানে করণীয় ধাপ ঠিক করে সে অনুযায়ী কমান্ড বা নির্দেশনা সাজাতে হয় কানোতে। এরপর প্রোগ্রাম চালিয়ে দেখতে হয় ঠিকঠাক চলছে কি না। ভুল থাকলে শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে। এভাবে কোডিং শেখা তো হয়ই, কোনো কিছু বিশ্লেষণ করা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি হয় শিশুর মধ্যে।

এই ধরনের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলো ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম। আবার কোড ডট অর্গ থেকেও সহজে প্রোগ্রামিং শেখা যায়। এর সবগুলোই ব্যবহার করে যায় বিনা মূল্যে।

যা হোক, জাকারবার্গ কিন্তু তাঁর মেয়েকে এক দিনে কোডিংয়ের জ্ঞান গুলিয়ে খাইয়ে দেননি। বরং অসীম ধৈর্য নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মেয়েদের অবশ্য সেদিকে নজর নেই। তারা এগোচ্ছে আপন গতিতে।

ওপরের ছবিতে ছোট মেয়ে অগাস্টের সঙ্গে বাবা মার্ক জাকারবার্গ। অগাস্টের বয়স তখন বড়জোর এক সপ্তাহ।

বাবা জাকারবার্গ ওই ছবির কমেন্টেই ছোট মেয়ে অগাস্টকে নিয়ে লিখেছেন, ‘একটি শিশুকে টাইপ করতে শেখানো আমার জন্য সবচেয়ে বড় ধৈর্যের পরীক্ষা। অগাস্ট আক্ষরিক অর্থেই মিনিটে এক থেকে দুটি শব্দ টাইপ করে। একটি শব্দে কয়েকটি অক্ষর লেখার পর যখন সে একটি ভুল করে, তখন ভুল করে একবারের জায়গায় তিনবার ডিলিট চাপে। এরপর তাকে পুরো শব্দটি আবার লিখতে হয়। তখন মনে হয় আমি আর পারছি না।’

সত্যিই বলেছেন মার্ক। ধৈর্যের পরীক্ষা বটে!