প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কর্মশালা
শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা চাপা গুঞ্জন! ব্যাপারটা তো একেবারে মামুলি কিছু নয়। ৪০০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন হবে আই ক্যাপ্টেন! সবার মধ্যে টানটান উত্তেজনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘোষণা হলো—আই ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হয়েছে রায়হানুল ইসলাম। রংপুরের রবার্টসনগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। কাছে গিয়ে অনুভূতি জানতে চাইলে সে বলে, ‘সত্যি, ভাবতে পারিনি যে আমিই আই ক্যাপ্টেন হবো! খুব ভালো লাগছে। এই আয়োজনে ইন্টারনেট বিষয়ে অনেক কিছু শিখেছি।’
রংপুরের আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিশু নিকেতন উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমানুল নিলয় বলে, ‘অল্প সময়ে অনেক কিছু শিখলাম। জানতে পারলাম অনেক অজানা তথ্য। ভবিষ্যতে এই তথ্যগুলো অনেক কাজে লাগবে।’
রংপুরে আই-ক্যাম্প সঞ্চালনা করেছেন আই জিনিয়াস সুনন্দা সরকার। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্প শেষে শিক্ষার্থীরা এসে যখন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে, তখন আনন্দে বুকটা ভরে যায়। তারা আই ক্যাম্পের প্রতিটা পর্ব উপভোগ করে, জানতে চায়, শিখতে চায়। এসব দেখে খুব ভালো লাগে। মনে হয়, শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে পারছি।’
এমনই সব প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে চলছে গ্রামীণ ফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসবের বিভিন্ন আই ক্যাম্প কর্মশালা। আয়োজনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ছিল শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি।
লালমনিরহাটের সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ রায়হান বলে, ‘আই ক্যাপ্টেন হতে পেরে খুব ভালো লাগছে। একই সঙ্গে চাপও আছে। ইন্টারনেট উৎসবে তো আমাকেই যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। এখন থেকেই সেই প্রস্তুতি নেব।’
আই ক্যাপ্টেন না হলেও নির্বাচিত ছয়জনের মধ্যে ছিল সামবিত সামি সাম্য। সে বলে, ‘ আই ক্যাপ্টেন হতে পারিনি। তাতে দুঃখ নেই। আমার বন্ধু আই ক্যাপ্টেন হয়েছে। আশা করছি, এবার আমার স্কুল থেকেই আই জিনিয়াস নির্বাচিত হবে।’
ঢাকার কেরানীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানা ইন্টারনেট কর্মশালা সম্পর্কে বলে, ‘কম সময়ে ইন্টারনেট সম্পর্কে জানার জন্য এই আয়োজনটা সত্যিই ভালো। এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি।’
পাশে দাঁড়িয়ে ছিল নাজমা আক্তার। সে বলে, ‘ইন্টারনেট বিষয়ে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিল না। আজ অনেক কিছু শিখেছি। ইন্টারনেট নিয়ে ভয়টাও অনেক কেটে গেছে।’
অন্যদিকে কেরানীগঞ্জের শাক্তা মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে নির্বাচিত আই ক্যাপ্টেন যেন একটু হতাশ! বলে, ‘সময়টা অনেক কম। পুরো একদিন ধরে যদি শিখতে পারতাম, খুব ভালো লাগত। আশা করি, ভবিষ্যতে সময় আরও বাড়ানো হবে। তবে আমি এমনিতে খুব খুশি হয়েছি। এতজনের মধ্যে আমি আই ক্যাপ্টেন হয়েছি! আই জিনিয়াস হওয়ার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেব।’
একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল জানায়, ‘ইন্টারনেটে শেখার অনেক কিছু আছে। আমি চাই সবাই যেন ইন্টারনেটের ভালো দিকগুলো ব্যবহার করে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যায়।’
দেশজুড়ে এই ইন্টারনেট কর্মশালা চলবে আরও দুই সপ্তাহ। তাই নতুন নতুন এলাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে নতুন নতুন চমক! আর জানা-অজানা রাজ্যের বিপুল সম্ভার!
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে গ্রন্থনা করেছেন সুচিত্রা সরকার
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করো www.prothom-alo.com/internetutshab
www.fb.com/internetutshab