থাকল বাকি ১০০
কতজন শিক্ষার্থী তা বলা মুশকিল। হাজার দুয়েক তো হবেই। এসেছেন সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। তবে একটা জায়গায় মিল আছে সবার। অ্যাপ বানাতে চান তাঁরা। চোখে-মুখেও বুদ্ধিদীপ্ত চাহনি। আর তাঁদের পদচারণে গত ২৬ নভেম্বর রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
ইউএপিতে সেদিন ছিল ‘ইএটিএল-প্রথম আলো অ্যাপস প্রতিযোগিতা ২০১৬’-এর প্রাথমিক বাছাইপর্ব। এতে ৫০০টি দল অংশ নিয়েছে। দলের সদস্যরা নিজেদের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বিচারকদের সামনে। এতে প্রতিযোগীদের উপস্থাপন করতে হয়েছে নিজেদের অ্যাপের ধারণার কারিগরি দিক থেকে ব্যবসায়িক কাঠামোর খুঁটিনাটি। প্রতি দলের জন্য সময় বরাদ্দ ছিল ১০ মিনিট। এরপর মুখোমুখি হতে হয় বিচারকের প্রশ্নের। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও অ্যাপ ডেভেলপাররা ছিলেন বিচারক। তিনজন বিচারকের সমন্বয়ে এক একটি জুরিবোর্ড গঠন করা হয়েছিল। আর এই জুরিবোর্ডগুলোর যেকোনো একটির মুখোমুখি হতে হয়েছিল প্রতিযোগী দলকে। মোট ১২টি জুরিবোর্ড গঠন করা হয়। এভাবেই চলে প্রতিযোগিতাটির ধারণাপত্র উপস্থাপন পর্ব।
ইএটিএল-প্রথম আলো অ্যাপস প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলীর সমন্বয়ক রাজেশ পালিত প্রথম আলোকে বলেন, এদিন প্রতিযোগীদের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো ছিল। উপস্থাপনায় কিছু কিছু দল খুব ভালো করেছে, আবার কিছু দলের মধ্যে দুর্বলতাও দেখা গিয়েছে। সর্বোপরি, বেশির ভাগ দলেরই ধারণা ভালো ছিল। কারিগরি দিক ও ব্যবসায়িক কাঠামো সম্পর্কে কিছুটা অজ্ঞতা রয়েছে।
গতকাল রোববার এই ধারণাপত্র উপস্থাপন পর্বের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ৫০০টি দল থেকে শীর্ষ ১০০টি দল নির্বাচন করা হয়। এদের মধ্যে গেম (২০টি), স্বাস্থ্য (১৮টি), শিক্ষা (১৩টি), ইউটিলিটিজ (৭টি), সামাজিক (৭টি), ব্যবসা (৭টি), জীবনশৈলী (৭টি), ফিন্যান্স (৩টি), প্রোডাকটিভিটি (৩টি), টুলস (২টি), বিনোদন (২টি), ভ্রমণ (২টি), কৃষি (২টি), খাবার (২টি), কনটেন্ট (১টি), অগমেন্টেড রিয়ালিটি (১টি), কেনাকাটা (১টি), সংবাদ (১টি) ও অন্যান্য (১টি) বিষয়বস্তুতে এই শীর্ষ দলগুলো নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত ধারণাপত্রগুলোর তালিকা পাওয়া যাবে www.eatlapps.com/contest2016 ঠিকানার ওয়েবসাইটে।
এথিকস অ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেডের (ইএটিএল) ও প্রথম আলো আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা চতুর্থবারের মতো শুরু হয়েছে গত ২৪ মে। এরপর সারা দেশের প্রায় ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণা চালানো হয়। একই সঙ্গে চলে অ্যাকটিভেশন পর্বও। পরবর্তী ধাপে সারা দেশ থেকে প্রাথমিকভাবে জমা পড়া ধারণাপত্রের মধ্য থেকে ৫০০টি ধারণাপত্র নির্বাচন করা হয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর। শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে এসব ধারণাপত্র জমা দেন। ১২ নভেম্বর প্রতিযোগিতার বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এবার প্রাথমিক উপস্থাপনা শেষে শীর্ষ ১০০টি দল নির্বাচিত করা হলো। আগামী মাসে এই দলগুলোর জন্য আঞ্চলিক পর্যায়ে গ্রুমিং পর্বের আয়োজন করা হবে। এরপর অ্যাপ বানিয়ে ইএটিএল অ্যাপ স্টোরে আপলোড করার জন্য জমা দিতে হবে। এভাবে আরও কয়েকটি পর্বে এগোবে প্রতিযোগিতা। সব শেষে হবে চূড়ান্ত বিচারকাজ। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের আয়োজন।
প্রতিযোগিতায় সেরা অ্যাপের জন্য রয়েছে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার। এ ছাড়া তিনটি বিভাগের প্রথম অ্যাপ পাবে দুই লাখ করে টাকা। এবারের আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিশ্বব্যাংক ও কানাডা। প্রতিযোগিতা আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ ও চ্যানেল আই।