ট্যাবলেট কম্পিউটারের বাজার আবার বাড়ছে
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ট্যাবলেট কম্পিউটার ও ক্রোমবুকের বৈশ্বিক চাহিদা ব্যাপক আকারে বাড়তে দেখা গেছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছর অনুযায়ী তুলনা করলে ট্যাবলেট কম্পিউটারের বাজার ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এ বছর ৩ কোটি ৯৯ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট পিসি বাজারে এসেছে। ক্রোমবুক বাজারে আসার হার বেড়েছে ৩৫৭ দশমিক ১ শতাংশ। এ বছরের প্রথম তিন মাসেই ১ কোটি ৩০ লাখ ইউনিট ক্রোমবুক বাজারে এসেছে।
আইডিসি বলছে, যে হারে ট্যাবলেট বাজারের প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে। ভারতের এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইডিসির ওয়ার্ল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি পার্সোনাল কম্পিউটিং ডিভাইস ট্র্যাকার ট্যাবলেট ও ক্রোমবুক বাজারে কোন প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে ভালো করেছে, সে তথ্যও তুলে ধরেছে।
আইডিসির তথ্য অনুযায়ী, ট্যাবলেট পিসির বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অ্যাপল। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১ কোটি ২৭ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট পিসি বাজারে ছেড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে তাদের বাজার দখল দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৭৭ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট বাজারে এনেছিল অ্যাপল। অর্থাৎ এ বছর অ্যাপলের ট্যাবলেট বাজারে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
বাজারে ৮০ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট পিসি এনে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে স্যামসাং। এতে ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬০ দশমিক ৮ শতাংশ।
বাজারে ৩৮ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট এনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লেনোভো। বাজারে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৩৮ দশমিক ১ শতাংশ। ট্যাবলেট বাজারের চতুর্থ স্থানে রয়েছে আমাজন। বাজারে ৩৫ লাখ ইউনিট ট্যাব এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাজারে সবচেয়ে বেশি ১৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমাজনের। ট্যাবলেট বাজারের ৮ দশমিক ৭ শতাংশ এখন আমাজনের দখলে।
ট্যাবলেট বাজারের পঞ্চম স্থানে রয়েছে হুয়াওয়ে। বাজারে ২৭ লাখ ইউনিট ট্যাব এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। ১ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাজারের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ দখল করেছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি।
আইডিসির মোবিলিটি অ্যান্ড কনজ্যুমার ডিভাইস ট্র্যাকারসের বিশ্লেষক অনুরুপা নাটরাজ বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচি চালু ও অফিসে কাজকর্ম শুরু হওয়ায় বাড়ি থেকে কাজকর্মে কিছুটা ভাটা পড়েছে। তবে স্বাভাবিক কর্মপরিবেশের অবস্থায় যেতে এখনো অনেক পথ বাকি। এ কারণে ট্যাবলেট, বিশেষ করে ডেটাকেবলসের চাহিদা বাড়তে থাকবে।
এদিকে ক্রোমবুক ল্যাপটপের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে এইচপি। তারা ৪৪ লাখ ইউনিট ক্রোমবুক এনেছে এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে। ক্রোমবুক বাজারের ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ এইচপির দখলে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লেনোভো। তারা ৩৩ লাখ ইউনিট ক্রোমবুক বাজারে এনে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ বাজার দখল করেছে।
ক্রোমবুকের বাজারে তৃতীয় স্থান এসারের। ১৯ লাখ ইউনিট ক্রোমবুক বাজারে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ১৫ লাখ ইউনিট ল্যাপটপ বাজারে এনে চতুর্থ স্থান দখল করেছে ডেল। ক্রোমবুকের বাজারে পঞ্চম স্থানে রয়েছে স্যামসাং। তারা এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১০ লাখ ইউনিট ক্রোমবুক বাজারে এনেছে।
আইডিসির গবেষক জিতেশ উবরানি বলেন, অনেক শিক্ষা বাজারে ট্যাবকে ছাড়িয়ে গেছে ক্রোমবুক ল্যাপটপগুলো। তবে দাম ও ক্লাউড সেবার ওপর নির্ভরশীলতার কারণে সব অঞ্চলে এটি মূলধারায় আসতে পারেনি।