চতুর্থ হুয়াওয়ে ইনোভেশন ডে'তে নতুন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ
কেমন হবে ভবিষ্যতের বিশ্ব? তথ্যপ্রযুক্তি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? নিত্যনতুন উদ্ভাবন আর আবিষ্কারের যুগে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ইনোভেশন ডেতে সে চেষ্টা করা হয়নি। কিন্তু নিকট ভবিষ্যৎটা কেমন হতে পারে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কোন পথে এগোনো উচিত সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ব্যাংককে আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ হুয়াওয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ইনোভেশন ডে। হুয়াওয়ে টেকনোলজিস এবং থাইল্যান্ডের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে আয়োজন করেছে এবারের ইনোভেশন ডে। এ অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের উপ প্রধানমন্ত্রী ড. সমকিদ জাটুসরিপিটাক। তিনি থাইল্যান্ডের ‘গোয়িং ডিজিটাল’ স্ট্র্যাটেজি তুলে ধরেন। এটি দেশটির রূপান্তরে মূল ভূমিকা পালন করছে। থাইল্যান্ডের অর্থনীতিকে আধুনিক করতেও এটি ভূমিকা রাখছে। তিনি থাইল্যান্ডে ডিজিটাল ইনোভেশনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে থাই সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশটির আইসিটি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে হুয়াওয়ের ভূমিকার ওপর জোর দেন।
এ বছরের আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ডিজিটাল এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য উদ্ভাবন’। আর সে ভাবনা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইলেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান গুও পিং। তাঁর ভাষায়, ‘এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক দেশ অর্থনীতিতে ডিজিটাল রূপান্তর শুরু করেছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধিটা তেমন দৃশ্যমান নয়। ফলে দিন দিন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেখানে কম উন্নত দেশগুলোর চেয়ে ডিজিটালভাবে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো তাদের অবকাঠামো থেকে বেশি সুফল পায়। আমরা ডিজিটাল প্রক্রিয়া গড়ে তুলে যৌথভাবে কাজ করতে চাই।’
অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ড ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এবং ন্যাশনাল ইনোভেশন এজেন্সি যৌথভাবে হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের (থাইল্যান্ড) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। পরবর্তী তিন বছরে হুয়াওয়ে ‘ওপেনল্যাবস’ তৈরিতে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে যা ক্লাউড ডেভেলপারদের দক্ষ করে তুলবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আইসিটি প্রতিভা গড়ে তুলবে।
এর আগে জানানো হয়, ‘অর্থনীতি ও সমাজের ওপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব’ বিষয়ে হুয়াওয়ে ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স (এলএসই) যৌথভাবে গবেষণা শুরু করেছে। কৃষি থেকে শুরু করে ব্যাংকিং খাত, সব শিল্পকেই ডিজিটালে রূপান্তর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঠিক ব্যবহার এবং কীভাবে আইসিটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে এ নিয়ে বিভিন্ন পলিসি এবং রেগুলেশন নিয়ে কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ড. সুভিত মায়েসিন্স, বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বারসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে এক অনানুষ্ঠানিক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ডিজিটাল রূপান্তরে সরকারের ভূমিকা ও অধিক কার্যকরী কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ভিন্ন সংস্কৃতি ও সমাজ অনুযায়ী প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগের পার্থক্য তুলে ধরেন। এ নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার কথাও বলেছেন তিনি। সে সঙ্গে বর্তমান ফোর জি প্রযুক্তি থেকে ফাইভ জি প্রযুক্তিতে উত্তরণ যে পুরো পৃথিবীকে বদলে দেবে এটাও স্বীকার করেছেন তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী