গুগল-মাইক্রোসফটের পর এবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও পাচ্ছে টুইটার
টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন জ্যাক ডরসি। অন্যদের সঙ্গে ২০০৬ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তোলেন তিনি এবং বিভিন্ন মেয়াদে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দুঃসময়ে টুইটারকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিনিয়োগকারী এবং মার্কিন আইনপ্রণেতা, বিশেষ করে রিপাবলিকানদের তোপের মুখে পড়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে।
ডরসির স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন পরাগ আগরওয়াল। তিনি এতদিন টুইটারের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আগরওয়াল টুইটারে যোগ দেন ২০১১ সালে। ২০১৭ সালে তাঁকে সিটিওর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগেও টুইটার-প্রধানের পদ থেকে জ্যাক ডরসিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পর তাঁকে সিইওর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, তবে ২০১৫ সালে ফিরে আসেন তিনি।
টুইটারের পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা স্কয়ারের সিইও হিসেবেও কাজ করছেন। আর সে কারণেই ডরসির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন টুইটারের কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা মনে করেন টুইটারের চেয়ে স্কয়ার কিংবা অন্যান্য ব্যক্তিগত প্রকল্পে বেশি সময় দেন ডরসি। মনোযোগের এই ঘাটতির কারণেই টুইটারের শেয়ারদরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি কিংবা প্ল্যাটফর্মটিতে উদ্ভাবনী সুবিধা যুক্ত হচ্ছে না বলে তাঁদের বিশ্বাস। বছর দেড়েক আগেও ডরসিকে টুইটার থেকে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
সিএনবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর টুইটারের সিইও হিসেবে ডরসির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর স্কয়ারের আইপিওর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেটির শেয়ারদর বেড়েছে ১ হাজার ৫৬৬ শতাংশ।
টুইটার থেকে পদত্যাগের খবর জানিয়ে এক বিবৃতিতে ডরসি বলেন, ‘অবশেষে আমার চলে যাওয়ার সময় এল।’ সঙ্গে যোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটির এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। পরাগ আগরওয়ালের নেতৃত্বে অগাধ বিশ্বাস আছেন বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আমি তাঁর দক্ষতা, হৃদয় এবং আত্মার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এবার তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার সময়।’
গতকাল সোমবার ডরসির পদত্যাগের ঘোষণা আসে। তবে গত রোববার কোনো কিছুর উল্লেখ না করেই ডরসি টুইটারে লেখেন, ‘আমি টুইটার ভালোবাসি।’
ডরসির ঘোষণার আগেই মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানায়, তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। ওই খবরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর খানিকটা বেড়েছিল।
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে কর্মীদের কাছে পাঠানো ই-মেইলে ডরসি লেখেন, টুইটারকে তিনি প্রতিষ্ঠাতা-নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান করতে চান না যা সময়ের সঙ্গে অন্যতম দুর্বলতায় পরিণত হতে পারে।
টুইটারের পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আসছে। বর্তমান চেয়ারম্যান প্যাট্রিক পিশেটের জায়গায় আসবেন সেলসফোর্সের প্রেসিডেন্ট ব্রেট টেইলর। প্যাট্রিক অবশ্য অডিট কমিটির প্রধান হিসেবে পর্ষদে থাকছেন। সদস্য হিসেবে ডরসিও থাকবেন, তবে ২০২২ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত।