করোনা নিয়ে প্রতারণা বাড়ছে, ইন্টারপোলের হুঁশিয়ারি
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত আর্থিক প্রতারণা বাড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন বা ইন্টারপোল। চলমান স্বাস্থ্য সংকটের সময় অনলাইনে কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটার সময় ক্রেতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থাটি। কারণ, পরিস্থিতিকে পুঁজি করে সাইবার দুর্বৃত্তরা আর্থিক প্রতারণার নানা ফাঁদ পেতেছে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সার্জিক্যাল মাস্ক ও অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জামের চাহিদা বাড়ায় অনেক দোকানে এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না। এ সুযোগ নিচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। ভুয়া দোকান, ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ ও ই-মেইলের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রির কথা বলছে তারা। অনলাইনে এসব পণ্যের ফরমাশ দিতে বলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা। অর্থের বিনিময়ে মাস্কসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম দেওয়ার কথা বললেও তা কখনোই পাঠায় না তারা। প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিতেই মূলত নানা আকর্ষণীয় অফার দেয় তারা।
ইন্টারপোলের বর্তমান মহাসচিব জারগেন স্টক বলেন, ‘অপরাধীরা করোনাভাইরাসের ভয় এবং অনিশ্চয়তার অপব্যবহার করে নিরীহ নাগরিকদের প্রতারণা করছে। যাঁরা স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগে আছেন এবং তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে প্রতারণা করছে দুর্বৃত্তরা। তাই যাঁরা অনলাইনে চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনবেন, তাঁরা কিছুটা সময় নিয়ে যাচাই–বাছাই করুন। বিক্রেতা সম্পর্কে যথাযথ খোঁজ নিন। সুনাম রক্ষা করা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন করুন। তা না হলে আপনার অর্থ অসাধু অপরাধীদের কাছে চলে যাবে।’
ইন্টারপোলে কাছে আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে যে প্রতিবেদন এসেছে, এতে একটি ঘটনাতেই হাজার হাজার ডলার ক্ষতির বিষয়টি জানা গেছে। এ অপরাধীরা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়েও কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
ইন্টারপোলের আর্থিক অপরাধ ইউনিটে সদস্য দেশগুলো থেকে নিয়মিত আর্থিক প্রতারণার তথ্য পাচ্ছে। এ ছাড়া এসব অপরাধ থামানোর জন্য অনুরোধ আসছে। প্রাথমিকভাবে এশিয়ার দেশগুলোতে লক্ষ্য করে এ ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতারকেরা ইউরোপসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ব্যবহার করছে। তারা এমনভাবে বোকা বানাচ্ছে যাতে ক্রেতা সহজে ধরতে না পারেন।
ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এশিয়া ও ইউরোপে ৩০টি ঘটনায় সাহায্য করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে ৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার জব্দ করা হয়েছে।
ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে ১৯৪টি সদস্য দেশে নতুন ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে সতর্ক করে ‘পার্পল নোটিশ’ জারি করা হয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে প্রতারকেরা প্রকৃত কোম্পানির ছদ্মবেশ ধরে একই নাম, ওয়েবসাইট, ই–মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে তড়িঘড়ি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করে। এ ধরনের প্রতারণা থেকে সুরক্ষিত থাকতে অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। ওয়েবসাইট, মেইল, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যোগাযোগকারী ব্যক্তি প্রকৃত ব্যক্তি কি না, তা যাচাই করে দেখতে হবে। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া