২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অনলাইনে আয়ের অন্যতম জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি বিপণন ব্যবস্থা, যেখানে কোনো অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে বহিরাগত ওয়েবসাইটের সূত্রে (রেফারেন্সে) কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি হলে বিক্রেতা সেই ওয়েবসাইটকে বা অ্যাকাউন্টকে তাঁর লাভের একটি অংশ কমিশন হিসেবে দিয়ে থাকেন। ধৈর্যসহকারে সময় ও শ্রম দিলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিচে উপস্থাপন করা হলো:

বিষয়বস্তু (নিশ) নির্ধারণ
প্রথমেই আপনি যে ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করতে চান, তা নির্ধারণ করতে হবে। তবে পণ্যের ধরন নির্বাচনের আগে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত। যেমন আপনি যে ধরনের পণ্য মার্কেটিং করতে চান, ক্রেতাদের সেই ধরনের পণ্য ক্রয়ের আগ্রহ আছে কি না অথবা সেই পণ্যের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে কি না। এমন পণ্য নির্বাচন করা উচিত যে ধরনের পণ্য বেশিসংখ্যক ক্রেতা কিনতে আগ্রহী হবেন।

 অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিয়ে গবেষণা

অনেক ধরনের অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে কাজ করা সম্ভব। তবে কাজ শুরু করার আগে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া ভালো। যেমন প্রথম অবস্থাতে সহজেই কোনো নেটওয়ার্কে কাজের অনুমতি পাওয়া যায়, কোন ধরনের পণ্যের বিবরণী আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন, কী ধরনের পণ্যের বিক্রি বেশি, কী ধরনের পণ্যের কমিশন বেশি, বাংলাদেশ থেকে সেই নেটওয়ার্কে কাজ করার জন্য অ্যাকাউন্ট করা যায় কি না, বাংলাদেশ থেকে পেমেন্ট তোলা যায় কি না, সর্বনিম্ন পেমেন্টের পরিমাণ কত, কত দিন পরপর পেমেন্ট তোলা যায় ইত্যাদি। পেওনিয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলা সুবিধাজনক।

 অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট ও লিংক তৈরি

কোনো অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে কাজ শুরু করতে হলে সেই নেটওয়ার্কের অনুমতি সাপেক্ষে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে সব নেটওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায় না। সে ক্ষেত্রে দেশের বাইরে অবস্থানরত পরিচিত কারও সাহায্য নিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যেতে পারে। প্রথম অবস্থাতেই সব নেটওয়ার্কে কাজের অনুমতি না–ও পাওয়া যেতে পারে। অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার আগে তাদের শর্তগুলো জানতে হবে। বিভিন্ন নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার শর্তাবলি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। অ্যাকাউন্ট তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন পণ্যের জন্য আলাদা অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরি করতে হবে। এই লিংকগুলো কনটেন্টে যুক্ত করতে হবে। প্রমোট করা লিংকে গিয়ে যদি কোনো ক্রেতা ওই পণ্য কেনেন, তাহলে কমিশন পাওয়া যাবে। তবে প্রমোট করা লিংকে গিয়ে যদি কোনো ক্রেতা ওই পণ্য না কিনে অন্য কোনো পণ্য কেনেন অথবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আরও কেনাকাটা করেন, তাহলে সেখান থেকেও কমিশন পাওয়া যেতে পারে। অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে তৈরি করা অ্যাকাউন্ট থেকে দেখা যাবে আপনার লিঙ্ক ক্লিক করে কতজন ভিজিটর গিয়েছেন, কত বিক্রি হয়েছে, কত কমিশন জমা হয়েছে ইত্যাদি। কমিশন তুলনামূলকভাবে কম হলেও বিক্রি বেশি হওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় অনেকেই amazon-এ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পছন্দ করেন। অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক ও অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিয়ে আরও জানতে offervault.com, affpaying.com সহ অন্যান্য ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।

 ওয়েবসাইট তৈরি

ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তবে ওয়েবসাইটটি যেন আকর্ষণীয় ও প্রফেশনাল দেখায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রেসপনসিভ ওয়েবসাইট তৈরি করলে তা যেকোনো ডিভাইস থেকে সহজে ভিজিট করা যায়। অনেকেই ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পছন্দ করেন। কারণ, যাঁদের ওয়েবসাইট সম্পর্কে ধারণা কম, তাঁরাও সহজেই ওয়ার্ডপ্রেসে কাজ চালিয়ে নিতে পারেন।

 চমৎকার কনটেন্ট তৈরি করা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। ক্রেতাদের আস্থা পেতে ধারাবাহিকভাবে স্বতন্ত্র ও উন্নত মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। কনটেন্টে ভালো মানের ছবি ব্যবহার করতে হবে। অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরি করে তা ছবি ও টেক্সটের মধ্যে যুক্ত করতে হবে। পণ্যের রিভিউ করলে অবশ্যই সততার সঙ্গে করতে হবে। নির্দিষ্ট পণ্যের ভালো দিকগুলো তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে খারাপ দিক থাকলে তা–ও উল্লেখ করতে হবে। এতে কনটেন্টের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। অন্যান্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার একই পণ্যের রিভিউ কীভাবে করেছে, তা যাচাই করে আরও বিস্তারিত ও আকর্ষণীয়ভাবে কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।

 কনটেন্ট প্রমোশন

ওয়েবসাইট তৈরির পর প্রথমেই গুগল সার্চে র‌্যাংক করা সম্ভব না–ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কনটেন্ট বিভিন্নভাবে প্রমোশন করা যেতে পারে। যেমন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা, গুগল, ফেসবুক ও অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া, ই–মেইল মার্কেটিং করা, এসইও জোরদার করা ইত্যাদি।