অনলাইনে আপনি কতটা সচেতন?
তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যবহারকারীরা আসলে একটু আলসে। কোনো সেবা সহজে পেতে তারা যতটা না সচেতন, ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে তার সিকিভাগ সচেতনতাও তাদের মধ্যে নেই। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনা তার বড় প্রমাণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সর্বোপরি অনলাইনে আপনি কতটুকু নিরাপদ সে প্রশ্ন তো আছেই, তবে সে নিরাপত্তা নিয়ে আপনি কতটুকু সচেতন, তা যাচাই করতে পারেন এই কুইজ থেকে। উত্তর নিচেই আছে। মিলিয়ে দেখে নিন।
১. মনে করুন এমন কেউ ফেসবুকে আপনার বন্ধু হওয়ার আহ্বান (ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট) জানাল, যাকে আপনি চেনেন না। কী করবেন?
* গ্রহণ করবেন
* অগ্রাহ্য করবেন
* বার্তা পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করবেন কীভাবে আপনাকে চেনে
২. স্মার্টফোন আনলক করে দেখলেন ১০টি অ্যাপ হালনাগাদ করার জন্য আপনার অনুমতি চাইছে। কী করবেন?
* হালনাগাদের বার্তা মুছে ফেলবেন
* পরে করবেন বলে রেখে দেবেন
* হালনাগাদ করবেন
৩. ফেসবুক বা ই-মেইলে বার্তা পেলেন। যেখানে বলা হয়েছে ১০ জন বন্ধুর কাছে বার্তাটি পুনরায় পাঠাতে (ফরওয়ার্ড) হবে। আপনি কী করবেন?
* মুছে ফেলবেন
* চমৎকার বার্তা। ১০ জন বন্ধুর কাছে পাঠাবেন
* ১০ জন না হোক, কাছের দুজনের কাছে পাঠাবেন
৪. আজ পোস্ট করা ছবি ভবিষ্যতে কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
* সত্য
* মিথ্যা
৫. স্মার্টফোনে গেম খেলার সময় সেটি আপনার বর্তমান অবস্থান জানতে চাইল। আপনার বন্ধুরা সবাই গেমটি খেলে এবং অবস্থান জানিয়েই খেলে। সুতরাং সেই নির্দিষ্ট গেমে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া নিরাপদ।
* সত্য
* মিথ্যা
৬. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কোন বিষয়টি মাথায় রাখবেন?
* নিজের সম্পর্কে যত কম সম্ভব তথ্য ভাগাভাগি করবেন
* চেনেন, শুধু এমন ব্যবহারকারীদের সঙ্গেই যোগাযোগ করবেন
প্রোফাইলের বিষয়বস্তু শুধু বন্ধুদের কাছে দৃশ্যমান করে রাখবেন
* ওপরের সব কটি
৭. খুব কাছের বন্ধু। যার প্রতি আপনার শতভাগ বিশ্বাস। সে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড চাইলে কি দেবেন?
* কেন দেব না?
* পাসওয়ার্ড দেবেন, তবে কাজ শেষ হলেই বদলে ফেলবেন
* দেবেন না
৮. আপনার পছন্দের ওয়েবসাইট আপনি নিশ্চিন্তে ব্রাউজ করতে পারেন। কারণ সেগুলো ম্যালওয়্যার বা যেকোনো ঝুঁকিমুক্ত।
* সত্য
* মিথ্যা
৯. ইন্টারনেটে যুক্ত থাকা অবস্থায় আপনার কাজের জন্য আপনি দায়ী।
* সত্য
* মিথ্যা
১০. অন্যকে নিয়ে তা-ই পোস্ট করুন, যা কেউ আপনাকে নিয়ে পোস্ট করলে আপনি বিব্রত হবেন না।
* সত্য
* মিথ্যা
উত্তর মিলিয়ে নিন
১. অগ্রাহ্য করবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকেই বন্ধু বানানো উচিত যাকে আপনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন।
২. হালনাগাদ করবেন। অপারেটিং সিস্টেম ও যেকোনো অ্যাপ সব সময় হালনাগাদ করে রাখা নিরাপদ। তা ছাড়া স্মার্টফোনে শুধু সে অ্যাপগুলোই রাখা উচিত যেগুলো আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন।
৩. মুছে ফেলবেন। প্রথমত, এ ধরনের বার্তা বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। দ্বিতীয়ত, ব্যাপারটি বিরক্তিকর।
৪. সত্য। অনলাইনে পোস্ট করার পর সে ছবি আপনি মুছে ফেললেই হলো না। কেউ নামিয়ে রাখতে পারে। পরবর্তী সময়ে ভাগাভাগি করতে পারে। আর তাই অনলাইনে করিয়া ভাবার চেয়ে ভাবিয়া কাজ করা ভালো।
৫. মিথ্যা। অনেক অ্যাপেই সেবা দিতে অবস্থানের প্রয়োজন হয় না, তবু সে তথ্য চায়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জিও-লোকেশন বন্ধ করে দিতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে প্রাইভেসি পলিসি পড়ে নিন।
৬. ওপরের সব কটি। কার সঙ্গে কী কী তথ্য শেয়ার করবেন, তা জেনে ও বুঝে করুন। প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি সেটিংয়ে দেখুন তথ্য শেয়ারের অপশনগুলো আপনার সিদ্ধান্তমাফিক আছে কি না।
৭. দেবেন না। পাসওয়ার্ড নিজের জন্য। ভাগাভাগির জন্য না। শুধু কিশোরদের ক্ষেত্রে অভিভাবক পাসওয়ার্ড বা ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
৮. মিথ্যা। গুগল, আমাজন, ফেসবুকের মতো বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইট তুলনামূলক নিরাপদ হতে পারে। তবে সে ওয়েবসাইটগুলোতেও আপনার কার্যক্রম বিপদ ডেকে আনতে পারে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে তথ্য কেলেঙ্কারির যে সমালোচনা চলছে, তা তৃতীয় পক্ষের অ্যাপের কারণেই হয়েছে। বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলেই সে লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। ওয়েব ঠিকানা যদি http-এর বদলে https দিয়ে শুরু হয়, তবে তা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।
৯. সত্য। অনলাইনে হোক বা অফলাইনে, যেকোনো সেবা ব্যবহারের আগে ব্যবহারকারীর কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। না জেনে বা না পড়েই সমর্থন জানালে সে দায়ভার কে নেবে? প্রাইভেসি পলিসি সহজ করার জন্য বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারকেরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তবু ব্যবহারকারীর নিজেরও তো কিছু দায় আছে।
১০. সত্য। অনলাইনে ভালো আচরণ অনুশীলন করুন। আপনি যা করবেন তা অনেককে প্রভাবিত করতে পারে। সেটা যেমন ঘরে, তেমন অফিসে, কখনো আবার গোটা বিশ্বেও।
আপনার উত্তরগুলো সঠিক হলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে ভুল হলে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবা উচিত।
গ্রন্থণা: মেহেদী হাসান
সূত্র: ম্যাকাফি ও www. wi. gov