ঢাকায় দেশের প্রথম কম্পিউটার মেলা আয়োজন

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির আয়োজনে ‘বিসিএস কম্পিউটার শো’ নামে দেশের প্রথম কম্পিউটার মেলা ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৯৩ সালে কম্পিউটার মেলার উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম (বাঁ থেকে তৃতীয়)‘আবর্ত: অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমরা’ বই থেকে

২৬ নভেম্বর ১৯৯৩
ঢাকায় দেশের প্রথম কম্পিউটার মেলা শুরু
বাংলাদেশে কম্পিউটারের ব্যবহার তখন সবে শুরু হয়েছে। সেই সময়ে আজ থেকে ঠিক ৩০ বছর আগে রাজধানী ঢাকায় প্রথম কম্পিউটার মেলার আয়োজন করা হয়। পাঁচ তারকা হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের বলরুমে অর্ধেক জায়গাজুড়ে আয়োজিত সেই মেলার নাম ছিল ‘বিসিএস কম্পিউটার শো ৯৩’।

বিসিএস কম্পিউটার শো উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার প্রচ্ছদ
‘আবর্ত: অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমরা’ বই থেকে

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের প্রথম সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির আয়োজনে বিসিএস কম্পিউটার শো ২৬ ও ২৭ নভেম্বর, দুই দিন ধরে চলে। সেই মেলার আহ্বায়ক আবদুল্লাহ এইচ কাফি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেই সময়ে বিসিএসের সদস্য ছিল ১৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১৭টি মেলায় অংশ নেয়। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছিল মেলায়। প্রতিদিন মেলা সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। কম্পিউটার বিষয়টিই তখন নতুন ছিল। তাই মেলার সাফল্য নিয়ে আমাদের মধ্যে সংশয় ছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম দুই দিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ সারি ধরে কম্পিউটার মেলা দেখতে এসেছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ ছিল দেখার মতো।’

প্রথম কম্পিউটার মেলার একটি স্টলে (বাঁ থেকে) আব্দুল্লাহ এইচ কাফি, এম শামসুল ইসলাম, মোস্তাফা জব্বার ও মুনিম হোসেন
‘আবর্ত: অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমরা’ বই থেকে

প্রথম মেলার সাফল্যের পর ১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় বিসিএস কম্পিউটার শোর আয়োজন হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের বলরুমের পুরোটা জুড়ে করা হয়। এরপর প্রতিবছরই এই মেলার পরিসর বাড়তে থাকে। প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য বিসিএস কম্পিউটার শো কম্পিউটার সমিতির বার্ষিক আয়োজনে পরিণত হয়েছিল।
আবদুল্লাহ এইচ কাফির লেখা আবর্ত: অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমরা বই থেকে জানা যায়, দেশের প্রথম কম্পিউটার মেলার উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম। মেলা আয়োজনে বিসিএসের তখনকার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য মোস্তাফা জব্বার, মঈন খান, মুনিম হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের অবদান ছিল।  

নোব্যার্ট উইনাহ্‌
কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি

২৬ নভেম্বর ১৮৯৪
গণিতজ্ঞ নোব্যার্ট উইনাহ্‌–এর জন্ম
সাইবারনেটিকস বিষের লেখক নোব্যার্ট উইনাহ্‌ যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে নোব্যার্টের লেখা গ্রন্থ পরবর্তীকালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণায় প্রভাব ফেলে। বইটিতে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত বিমান–বিধ্বংসী ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষার কথা বলেন। যাতে বিমান-বিধ্বংসী ব্যবস্থা শুত্রুপক্ষের রাডারের ছবি ব্যবহার করে তাদের বিমানের গতিপথ জানতে পারে।

এই বইতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা লিখেছিেলেন নোব্যার্ট উইনাহ্‌

নোব্যার্ট উইনাহ্‌ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর গবেষণা পরে ইলেকট্রনিক প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ও কন্ট্রোল সিস্টেমে কাজে লাগে। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য বই হলো—গড অ্যান্ড গোলেম, ইনকরপোরটেড: আ কমেন্ট অন সারটেইন পয়েন্টস হোয়্যার সাইবারনেটিকস ইমপিংজ অন রিলিজিয়ন (১৯৬৪), নন–লিনিয়ার প্রবলেমস অব র‌্যান্ডম থিওরি (১৯৫৮), দ্য হিউম্যান ইউজ অব হিউম্যান বিয়িংস (১৯৫০), সাইবারনেটিকস: অর কন্ট্রোল অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইন দ্য অ্যানিম্যাল অ্যান্ড দ্য মেশিন (১৯৪৮) ও জেনারালাইজড হারমোনিক অ্যানালাইসিস (১৯৩০)। ১৯৬৪ সালের ১৮ মার্চ মারা যান নোব্যার্ট উইনাহ্‌।

১৯৭৫ থেকে ২০২২: বিভিন্ন সময়ে মাইক্রোসফটের লোগো
সংগৃহীত

২৬ নভেম্বর ১৯৭৬
হাইফেন বাদ দিয়ে এক শব্দ হলো মাইক্রোসফট
দুই বন্ধু বিল গেটস ও পল অ্যালেন ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা করেন মাইক্রোসফট। এটি এখন পৃথিবীর শীর্ষ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান। শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির নামের মাঝখানে একটি হাইফেন ছিল। তখন এর নাম ছিল মাইক্রো–সফট। লোগোতেও আলাদা দুটি শব্দ ‘মাইক্রো’ ও ‘সফট’ শোভা পেত। ১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর হাইফেন তুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। ট্রেডমার্ক নিবন্ধনও হয় মাইক্রোসফট নামে।