এই মুহূর্তে দেশের কম্পিউটার বাজারের অবস্থা কেমন?
মো. জহিরুল ইসলাম: এখন মোটামুটি ভালো। তবে পুরোনো পণ্যে বাজার সয়লাব। কাস্টমসে নানাভাবে ফাঁকি দিয়ে এসব পুরোনো পণ্য আনা হচ্ছে। এমনিতে বাজার দ্রুতই বাড়বে।
বাজারে ক্রেতাদের আগ্রহ কোন দিকে?
মো. জহিরুল ইসলাম: ন্যায্য ও সঠিক দামে কম্পিউটার কেনার প্রতি আগ্রহ রয়েছে। ব্যাংকগুলো অনেক পণ্য কেনার জন্য ঋণ (কনজ্যুমার লোন) দেয়। কিন্তু কম্পিউটার কেনার জন্য ঋণ দেয় না। কম্পিউটারের জন্য ঋণ দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য খুব সুবিধা হয়। ৫০ হাজার টাকা ঋণ হলেই হয়। তাঁরা তো ভবিষ্যৎ। পাকিস্তান ১০ লাখ ল্যাপটপ বিনা মূল্যে দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার কেনার ঋণসুবিধাও নেই। জাতি গঠনের জন্য এমন সুবিধা প্রয়োজন।
কম্পিউটার বিক্রি কেমন বেড়েছে?
মো. জহিরুল ইসলাম: নতুন ল্যাপটপ কম্পিউটারের ওপর কর ও ডলারের দাম বাড়ায় ল্যাপটপের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগে যে মানের ল্যাপটপ ৪০ হাজার টাকায় কেনা যেত, এখন সেটির দাম ৭০ হাজার টাকা হয়েছে। এ কারণে পুরোনো ল্যাপটপ বাজারে ঢুকছে। যেগুলো দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। তবে কম্পিউটার বিক্রির হার বাড়বেই। ব্যাক গিয়ারে, অর্থাৎ পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই।
দেশের কম্পিউটার পণ্য, অর্থাৎ হার্ডওয়্যার খাত প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। দেশে কম্পিউটার উৎপাদনের প্রয়োজন আছে কি না?
মো. জহিরুল ইসলাম: প্রয়োজন তো আছেই। কিছুটা হলেও কম দামে তো পণ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারের নীতিমালা উৎপাদনবিরোধী। কম্পিউটার কারখানার জন্য আমদানি করা কাঁচামাল দেখলেই কাস্টমস অনেক বেশি কর আরোপ করে। কাস্টমসের আইন ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। আমরাও একটা কারখানা করেছি হাইটেক পার্কে, শিগগিরই উৎপাদনে যাব। কিন্তু কাজটি কঠিন হয়ে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান নীতিমালার জন্য। হাইটেক পার্কে ড্যাফোডিলও একটি কারখানা দিয়েছে। তারাও একই সমস্যায় পড়েছে। তবে ওয়ালটন তাদের কারখানা চালু রেখেছে।
সার্বিকভাবে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে হার্ডওয়্যার খাত কেমন ভূমিকা রাখছে?
মো. জহিরুল ইসলাম: দেশের সফটওয়্যার খাত থেকে রপ্তানি হয়। বলা হয়, বার্ষিক ১০০ কোটি ডলারের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা রপ্তানি হয়। হার্ডওয়্যারের কোনো রপ্তানি নেই। তবে স্থানীয় বাজার রয়েছে, সেটি বড়ও হচ্ছে। তাই স্থানীয়ভাবে কম্পিউটার উৎপাদনের কারখানা করা যায়। সেটি করতে দিতে হবে, তাহলে তথ্যপ্রযুক্তি খাত আরও এগিয়ে যাবে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : পল্লব মোহাইমেন।