পাঁচ হাজার বছর ধরে চলবে যে ব্যাটারি

নতুন উদ্ভাবিত এই ব্যাটারি কাজ করবে হাজার হাজার বছরছবি: ইউনাইটেড কিংডম অ্যাটমিক এনার্জি অথরিটি

একদল বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী এমন একটি ব্যাটারি তৈরি করেছেন, যা হাজার বছর ধরে শক্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যুক্তরাজ্যের আণবিক শক্তি কর্তৃপক্ষ ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই ব্যাটারি তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানীরা এই ব্যাটারিকে বিশ্বের প্রথম ‘কার্বন-১৪ ডায়মন্ড ব্যাটারি’ হিসেবে দাবি করছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ব্যাটারি শ্রবণযন্ত্র ও পেসমেকারের মতো চিকিত্সাসংক্রান্ত যন্ত্রে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা যাবে। এতে অনেক যন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।

বিজ্ঞানী সারাহ ক্লার্ক বলেন, অবিচ্ছিন্ন শক্তি প্রদানের জন্য এই ব্যাটারি নিরাপদ ও টেকসই উপায়। এমন উদীয়মান প্রযুক্তিতে কার্বন-১৪-এর জন্য হীরা ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ব্যাটারি কার্বন-১৪ ব্যবহার করে, যা কার্বনের একটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ। এই আইসোটোপের অর্ধ-জীবন ৫ হাজার ৭০০ বছর; যার অর্থ নতুন ধরনের ব্যাটারি কয়েক হাজার বছর পরেও তার অর্ধেক শক্তি ধরে রাখবে। প্রোটোটাইপ ব্যাটারির আকার আধা মিলিমিটার।

কার্বন-১৪–নির্ভর ব্যাটারি তৈরির অন্যতম কারণ হচ্ছে কার্বনের এই আইসোটোপ থেকে স্বল্প পরিসরে বিকিরণ নির্গত হয়, যা যেকোনো কঠিন পদার্থ দ্বারা দ্রুত শোষিত হয়। এই ব্যাটারি চরম পরিবেশেও ব্যবহার করা যেতে পারে। মহাকাশ কিংবা পৃথিবীর যেকোনো চরম পরিবেশে এই ব্যাটারি বেশ কাজে আসবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টম স্কট বলেন, ক্ষুদ্র শক্তির উৎস হিসেবে নতুন প্রযুক্তির ব্যাটারি মহাকাশ প্রযুক্তি ও বিভিন্ন চিকিৎসাযন্ত্রে ব্যবহার করার সুযোগ আছে। এমন ব্যাটারি পারমাণবিক বর্জ্য মোকাবিলার ক্ষেত্রে একটি নিরাপদ বিকল্প উপায় দিতে পারে। কিছু নিউক্লিয়ার ফিশন পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্রাফাইট ব্লকে কার্বন-১৪ উৎপন্ন হয়। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৯৫ হাজার টন গ্রাফাইট ব্লক রয়েছে। গ্রাফাইট ব্লক থেকে সহজে কার্বন-১৪ নিষ্কাশন করে এমন ব্যাটারি তৈরির বিশাল সুযোগ আছে।

সূত্র: বিবিসি